স্বীকৃতি বিশ্বাস
সনাতনীদের ৮দফা দাবিতে গঠিত সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র শ্রী শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভূকে প্রধান আসামী করে আরও ১৮ জন বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতাসহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনকে আসামি করে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের চাঁদগাঁও থানার উত্তর মোহরার আব্দুল লতিফ খানের ছেলে ফিরোজ খান এ মামলা দায়ের করেন।মামলা নং ২৫২।
মামলার আসামিরা হলেন: (১) চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ৩৮, (২) অজয় দত্ত ৩৪, সমন্বয়ক হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, চট্টগ্রাম (৩) লীলা রাজ্ দাস ব্রহ্মচারী ৪৮ (৪) গোপাল দাশ টিপু ৩৮ (৫) ডাঃ কথক দাশ ৪০ (৬) প্রকৌশলী অমিত ৩৮ (৭) রনি দাশ ৩৮ (৮) রাজীব দাশ ৩২ (৯) কৃষ্ণ কুমার দত্ত ৫২ (১০) জিকু চৌধুরী ৪০ (১১) নিউটন দে ববি ৩৮ (১২) তুষার চক্রবর্তী রাজীব ২৮ (১৩) মিথুন দে ৩৫ (১৪) রুপন ধর ৩৫ (১৫) রিমন দত্ত ২৮ (১৬) সুকান্ত দাশ ২৮ (১৭) বিশ্বজিৎ গুপ্ত ৪২ (১৮) রাজেশ চৌধুরী ২৮ (১৯) হৃদয় দাস( ২৫) প্রমুখ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ ই আগষ্ট বাংলাদেশে গণ অভ্যুত্থান হওয়ার পর চট্টগ্রাম থানাধীন কোতোয়ালি নিউ মার্কেট জিরোপয়েন্টে অবস্থিত স্তম্ভে উপর বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতা বাংলাদেশের একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, যা বর্তমানে উক্ত স্থানে আছে।
গত ২৫ শে অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের আয়োজনে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে বিকাল ৩টায় একটা মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার লোক চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে সমাবেশ শুরু হওয়ার পূর্ব থেকেই জড়ো হতে থাকে।
ঐদিন বিকাল চারটা দশে ১ থেকে ৯ নং আসামির ইন্ধনে ১০ থেকে ১৯ নং আসামিসহ অজ্ঞাত নামা ১৫/২০ আসামি কোতোয়ালি থানাধীন নিউ মার্কেট মোড়স্থ জিরোপয়েন্ট স্তম্ভ ও আশেপাশে সুপরিকল্পিতভাবে দেশের সার্বভৌমত্বকে অবজ্ঞা প্রদর্শনের হীন উদ্দেশ্যে, দেশের অখন্ডতাক অস্বীকার করার মানসে দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্বের প্রতীক স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অসম্মান প্রদর্শন করে অবমাননা করে কোতোয়ালি থানাধীন নিউ মার্কেট জিরো পয়েন্টের স্তম্ভের উপর পূর্ব থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার টানানো বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপর সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে সেখানে স্থাপন করা হয়।
যা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অখণ্ডতাকে অস্বীকার করার শামিল। আসামিরা তাদের সংগঠনের নেতৃবৃন্দের পরস্পর অপরাধমূক ষড়যন্ত্র করে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপর তাদের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে দেশের ভিতর অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশ অকার্যকর করা তথা রাষ্ট্রদ্রোহ কাজে লিপ্ত হয়েছে এবং বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে শ্রেনিবিদ্বেষের জন্ম হয়েছে এবং ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আসামিরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করে নাগরিকদের মধ্যে শ্রেণি বিদ্বেষ ছড়িয়ে ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ করেছে।
মামলার সংবাদ পেয়ে ৩১ অক্টোবর মধ্যরাতে ফেইসবুক লাইভে আসেন শ্রী শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারী প্রভু। এসময় তার উপর দায়েরকৃত মামলা মিথ্যা ও হয়রানিমুলক দাবি করে এমন মামলা তীব্র নিন্দা জানান তিনি। আজ বৃহস্পতিবারের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন জানিয়ে তিনি সকল সনাতনীদের প্রতি কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।