স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
কালীপূজা বা শ্যামাপূজা ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে উদ্ভূত একটি উৎসব, যা হিন্দু দেবী কালীকে উৎসর্গ করা হয়। এটি হিন্দু পঞ্জিকার কার্তিক মাসের দীপান্বিতা অমাবস্যা পালিত হয়। সনাতনীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব শ্যামাপূজা বা কালী পূজা।
পঞ্জিকা মতে, অমাবস্যা তিথি আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল ৩টা ২২ মিনিটে শুরু হয়ে আগামীকাল শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪৬ মিনিটে শেষ হবে। তাই আজ শক্তি ও শান্তির দেবী শ্যামা মায়ের পূজা অনুষ্ঠিত হবে।এই সময়ে কালীপূজার পাশাপাশি অনেকেই লক্ষ্মীপূজা করবেন।আজ দীপাবলি উৎসব পালিত হবে। এটি দীপাবলি, দীপান্বিতা, দীপালিকা, সুখরাত্রি, সুখসুপ্তিকা এবং যক্ষরাত্রি নামেও অভিহিত হয়।
কাশীনাথ রচিত কালীসপর্যাবিধি গ্রন্থে এই পূজার সর্বপ্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৭৬৭খ্রিস্টাব্দে। অশুভ অকল্যাণের প্রতীক অন্ধকারকে দূর করে শুভ ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় এই উৎসব হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা উদযাপন করছে শত শত বছর ধরে। দীপাবলির দিন মধ্যরাতে শুরু হয় শ্রী শ্রী শ্যামাপূজা বা কালীপূজা।
উৎসবটি বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, মিথিলা, বিহার, ওড়িশা, আসাম এবং ত্রিপুরার মতো অন্যান্য স্থানের পাশাপাশি বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়।
হিন্দু পুরাণ মতে, কালী দেবী দুর্গারই একটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালীপূজা হলো শক্তির পূজা। জগতের সব অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়।
কালী দেবী তাঁর ভক্তদের কাছে শ্যামা, আদ্য মা, তারা মা, চামুণ্ডি, ভদ্রকালী, দেবী মহামায়াসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। কালীপূজার দিন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে ও শ্মশানে প্রদীপ প্রজ্বালন করে স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করে। এটিকে বলা হয় দীপাবলি।
দুর্গাপূজার মতো কালীপূজায়ও গৃহে বা মণ্ডপে মৃণ্ময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করা হয়। মন্দিরে বা গৃহে প্রতিষ্ঠিত প্রস্তরময়ী বা ধাতুপ্রতিমাতেও কালীপূজা করা হয়। মধ্যরাত্রে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত অতান্ত্রিক ব্রাহ্মণ্যমতে আদ্যাশক্তি কালীর রূপে কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়।