রুহুল আমিন,ডিমলা(নীলফামারী)
১৭ সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষা দিবস ও জুলাই’২৪ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনায় বলিয়ান হয়ে ছাত্র-জনতা সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা।
বৃহস্পতিবার(১৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নীলফামারী জেলার ডিমলার বালাপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
টাকা যার শিক্ষা তার-এই নীতি মানি না, শিক্ষা কোনো পণ্য নয়-শিক্ষা আমার অধিকার, শিক্ষার আর্থিক দায়িত্ব-রাষ্ট্রকে নিতে হবে ইত্যাদি শ্লোগানের মধ্য দিয়ে মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রাশেদুজ্জামান রাশেদ, জাফর হোসেন জাকির, নাসির ভূইয়া, শাকিল প্রধান, জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, ইউনুছ আলী, রফিকুল ইসলাম, রাব্বি ইসলাম, মোশাহেদুল ইসলাম মানিক, অজিবর রহমান লেবু প্রমুখ।
রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, বছরের নয় মাস পার হয়েও কোনো কোনো স্কুল বিজ্ঞান বই দেওয়া নাই। প্রশ্ন তুললে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা আগে থেকেই জানতাম এই সরকার দেশ থেকে পালাবে। এই শিক্ষা ব্যবস্থা থাকবে না। তাই আমরা বই দেইনি। এই যদি হয় স্কুলগুলোর চিত্র তবে কেমন করে দেশে সংস্কার আসবে। উপজেলার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগুলোতে নিয়মিত ক্লাস, শিক্ষক সংকট নিরসন, লাইব্রেরী সেমিনারে পর্যাপ্ত বই, ল্যাবরেটরির মান উন্নয়ন, কলেজগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন, গণপরিবহনে ছাত্রদের হাফ ভাড়া চালু করতে হবে। নিয়মিত প্রতিষ্ঠানগুলো মনিটরিং করতে হবে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
জাফর হোসেন জাকির বলেন, ১৯৬২ সালে এস এম শরীফের নেতৃত্বে গঠিত শিক্ষা সংকোচন নীতি প্রণয়ন করেন। এই শিক্ষা নীতিতে বলা হয় শিক্ষা ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থীরা আর ৪০ শতাংশ রাষ্ট্র বহন করবে। এই শিক্ষা নীতি বাতিলের দাবীতে ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আন্দোলন করতে ওয়াজিউল্লা, বাবুলসহ অনেক ছাত্র-জনতা শহীদ হন। কিন্তু স্বাধীন দেশে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পার হওয়ার পরও ‘টাকা যার শিক্ষা তার’ শিক্ষা নীতিতেই বহাল রয়েছে। শিক্ষার প্রধান ধারাই এখন বেসরকারি ধারা। জুলাই’২৪ অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করলেও এখন পর্যন্ত শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়নি। শিক্ষা সংস্কারের রূপরেখা জনগনের সামনে তুলে ধরতে হবে। দেশ স্বাধীনের ৫৩ বছরে অনেকগুলো শিক্ষানীতি প্রণয়ন হলেও জনমানুষের সার্বজনীন বৈষম্যহীন বিজ্ঞানভিত্তিক সেকুলার একই ধারার শিক্ষা দাবী আজ সময়ের দাবী।
সমাবেশ শেষে ঘন্টাব্যাপি সাংস্কৃতিক কর্মীদের পরিবেশনায় দেশত্ববোধক, জাগরনের, দ্রোহের গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।