কোটা আন্দোলনে সহিংসতায় নিহত শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গ তুলে সংবাদ সম্মেলনে কাঁদলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেলে গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।
এ সময় সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা তো বেশি কিছু চায়নি। তারা অধিকার চেয়েছে।
আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য বলেছে। আসুন, আমরা আলোচনা করি। সেটা আপনারা করলেন না, চেষ্টাও করেননি। হাইকোর্ট নিয়ে আপনাদের যে দাম্ভিকতা, জমিদারসুলভ যে ব্যবহার তা করেছেন।
বারবার ধমক দিয়েছেন, হুমকি দিয়েছেন। পরে তাদের গুলি করে হত্যা করেছেন। এরা শহীদ, এরা আমাদের সন্তান। জন্মের পর থেকে এত ভয়াবহ, নৃশংস ঘটনা আর দেখিনি।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, ‘একটা ছেলে গুলি খেয়েছে, গুলি খাওয়া পর পর তার বন্ধু যখন টেনে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ আবার সরাসরি গুলি করেছে। একজন পুলিশ অফিসারের ছেলে নিহত হয়েছে। মা-বাবা খোঁজ করে যখন পাননি তখন সাংবাদিকরা বলেছেন মর্গে যান। মর্গে গিয়ে দেখেন তাদের ছেলের নিথর দেহ পড়ে আছে। গায়ে অসংখ্য গুলি।
পুলিশ অফিসার টেলিফোন করে সিনিয়র অফিসারকে বলছেন, ‘একজন মানুষকে মারতে কয়টা গুলি লাগে, স্যার।’ এই দৃশ্য আমাদের দেখতে হচ্ছে, শুনতে হচ্ছে। তার পরও আমরা বলব, এটা একটা রাষ্ট্র। তার পরও বলব, এটার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম একাত্তর সালে।’
তিনি বলেন, ‘একটা নাটক প্রায়ই দেখা যায়, গায়ের যে মোড়ল থাকে, একটা বাজে লোক হিসেবে চিহ্নিত। সে তার প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়, সব পুড়িয়ে দেয়। পুড়িয়ে দিয়ে পরদিন সকাল বেলা ওই বাড়িতেই হাজির, সঙ্গে অনেক কিছু নিয়ে যায়। কাপড়, খাওয়া-দাওয়া, দুঃখ প্রকাশ ইত্যাদি করে। এখন আমরা সেই দৃশ্য আবার দেখছি। আমরা দেখছি, যাদের হত্যা করা হলো তাদের পরিবার-পরিজনকে নিয়ে এসে টাকা দিওয়া হলো। এভাবে কি ওই পরিবারের সমস্যা সমাধান করতে পারবেন? আপনারা তো গুলি করে মেরেছেন। আপনার পুলিশ গুলি করে মেরেছে। একটা পুলিশের বিরুদ্ধেও তো ব্যবস্থা নিলেন না। রংপুরের সাঈদের বিষয়ে বরং উল্টো তথ্যমন্ত্রী অশালীন, অশ্রাব্য কথাবার্তা বলেছেন; যা কোনোমতে মেনে নেওয়া যায় না। এটা চরম মশকরা। একজন শহীদের সঙ্গে এর চেয়ে বড় তামাশা আর হতে পারে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এ ধরনের অত্যাচার-নিপীড়ন মেনে নেয়নি। যতই চেষ্টা করেন তাদের দমাতে পারবেন না।’