...
মঙ্গলবার, জুলাই ১৬, ২০২৪

সিলেটে বাড়ছে বন্যার পানি, প্রস্তুত আশ্রয়কেন্দ্র

যা যা মিস করেছেন

লোকমান হাফিজ, সিলেট:

সিলেটে অতি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি। হু হু করে বাড়ছে নদনদীর পানি। ঘুর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সিলেট এবং এর উজানে টানা ভারি বর্ষণের কারণে ফুসে উঠছে এ অঞ্চলের নদীগুলো।

বিশেষ করে প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার অবস্থা অনেকটা বেসামাল প্রতিনিয়ত বাড়ছে সুরমা নদীর পানি। সিলেট শহরের অনেক এলাকার রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্যার আশঙ্কায় ভয়ে আছেন সিলেট নগরীর লোকজন।

বুধবার (২৯ মে) সারারাত ভারি বৃষ্টি হওয়ায় নগরীতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এদিকে সিলেট সকল উপজেলায় বন্যার পানি প্রবেশ করছে। তবে বেশি প্লাবিত হচ্ছে সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ।

বুধবার (২৯ মে) রিডিং অনুযায়ী সিলেটের সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ১০ দশমিক ৮০মিটার। গত রাতের বিরামহীন বৃষ্টিপাতের পর আজ সকাল ৬টার দিকে এ পয়েন্টে অনেক পানি বৃদ্ধি পায়। সুরমানদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানির উচ্চতা ১৩ দশমিক ৭৪ মিটার যা বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কানাইঘাট অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৬৬ মিলিমিটার বলে নিশ্চিত করেছেন কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন।

সুরমার মতোই ফুঁসছে কুশিয়ারা। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ৯ দশমিক ৪৫ মিটার কিন্তু শেওলায় ১৩ দশমিক ৫ মিটার,আমলসিদ পয়েন্টে ১৫ দশমিক ৪০ মিটার।সারিনদীর ডাউকি পয়েন্টে পানির উচ্চতা ১২ দশমিক ৫ মিটার যা বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ইউএনও শেরপুর জাহাঙ্গীর বখত জানান এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৬৬মিলিমিটার।
গোয়াইনঘাট উপজেলার ইউএনও তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা সর্বদা মাঠে রয়েছি। আমি নিজে বন্যা পরিস্থিতি তদারকি করছি।

উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মনিটরিং সেলের অফিসারসহ জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বন্যা দুর্গত ও ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা সমূহে জনপ্রতিনিধিগণ সহ সরেজমিনে কার্যক্রম পরিচালনা করছি সকাল থেকে। যে সকল এলাকায় ঝুঁকি পূর্ণ ও প্লাবিত হতে পারে সে সকল এলাকার ঘরবাড়ি, বাজার ও দোকান সমূহ থেকে জানমাল নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার জন্য স্থানীয়দের সতর্ক করছি।

উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে মোট ৫৬ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও প্লাবণ প্রবণ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে জনগণকে দ্রুত অবস্থান নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের হাওর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সারিঘাট-গোয়াইনঘাট সড়কের দুটি পয়েন্টে যথাক্রমে গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়কের শিমুলতলা পয়েন্ট প্লাবিত হয়েছে।

হাওরাঞ্চলের বাড়িঘরের মানুষ পানিবন্দী। রুস্তমপুর, লেংগুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাও, পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলংয়ে প্লাবনের পরিমাণ বেশি হয়েছে।

কানাইঘাট উপজেলার ইউ এন ও ফারজানা নাসরিন বলেন,আমরা সর্বদা মাঠে রয়েছি।আমি নিজে কানাইঘাট বাজার ও কানাইঘাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এর পার্শ্ববর্তী ব্রীজ সংলগ্ন এলাকা সহ বেশ কয়েকটি ঝুকিপূর্ণ জায়গা পরিদর্শন করেছি।দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের ১৮ টি আশ্রয়কেন্দ্র পর্যাপ্ত পরিমাণ সুযোগ -সুবিধাসহ প্রস্তুত রয়েছে।

আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে চালের মজুত রেখেছি। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও প্লাবণ প্রবণ এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে জনগণকে দ্রুত অবস্থান নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।

কানাইঘাট উপজেলার প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের হাওর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কানাইঘাট বাজার ও কানাইঘাট টু বাগান সংযোগ সড়কের মন্দির,আমবাড়ি,আমরি খাল পয়েন্ট প্লাবিত হয়েছে।
হাওরাঞ্চলের বাড়িঘরের মানুষ পানিবন্দী।

১ও২নং ইউপির মুলাগুল বাজার,কান্দলা,মেচা,উত্তর ও দক্ষিণ লক্ষিপ্রাসাদ,কুওরগড়ীতে প্লাবনের পরিমাণ বেশি হয়েছে।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, আমি সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।আমাদের চারিকাটা ও নিজপাট ইউনিয়নের কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ১২ টি আশ্রয়কেন্দ্র সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ প্রস্তুত রেখেছি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) সিলেট কর্মকর্তা দীপক রঞ্জন জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল সিলেটের উপর দিয়ে গিয়ে ভারতের মেঘালয়ে প্রবেশ করেছে, এর প্রভাবে সিলেট ও মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে যার দরুন সিলেটের নদীগুলোতে গত ২৪ ঘন্টায় ১৫-১৬ মিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি নামতে শুরু করলে এ পানি সপ্তাহখানেকের মধ্যে কমে যাবে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

Previous article
Next article
ইবিতে কলাম-ফিচার ও লেখালেখির ভবিষ্যৎ’ বিষয়ক কর্মশালা ইবি প্রতিনিধি: ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কলাম-ফিচার ও লেখালেখির ভবিষ্যৎ’ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম ইবি শাখার উদ্যোগে বুধবার (২৯ মে) ইবি ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইইয়ার) ভবনের কক্ষে দুপুর ২ টায় কর্মশালাটি শুরু হয়। লেখক ফোরামের ইবি শাখার সভাপতি আবু তালহা আকাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন এন্ড রিসার্চের (আইআইইআর) পরিচালক ড. মামুনুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সংগঠনটির ইবি শাখার উপদেষ্টা শরিফুল ইসলাম ও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস. এ. এইচ ওয়ালিউল্লাহ বিশেষ অতিথি বক্তব্যে শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ এক দিনে পরিপক্ব হয় না, লিখতে লিখতে একসময় পরিপূর্ণ লেখক হতে পারবে। আমি আমার কাজ করে যাব, বাকিটা সৃষ্টিকর্তা দিবেন’। সভাপতি আবু তালহা আকাশ বলেন, দক্ষ লেখক তৈরিতে লেখক ফোরাম প্রতিষ্ঠা পরবর্তী সময় থেকেই নানা আয়োজন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের আজকের এই আয়োজন। আশা করছি এ থেকে নতুন লেখকরা নব উদ্যোমে তাদের যাত্রা শুরু করতে পারবে। প্রসঙ্গত, ‘সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হোক লেখনীর ধারায়’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। তরুণ লেখকদের পরামর্শ দেওয়া, পত্রিকায় লেখা প্রকাশে সহযোগিতা করা সহ লেখালেখি বিষয়ক সভা, সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করে থাকে বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। আনিসুর রহমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোবাইল :০১৮১৫৪৫৩০২২ তারিখ:২৩.০৫.২০২৪

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security
Seraphinite AcceleratorOptimized by Seraphinite Accelerator
Turns on site high speed to be attractive for people and search engines.