তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ২নং পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ি ভাঙ্গার পার গ্রামে। এ ঘটনায় ওই পরিবারের এক শিশু আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে বসতঘরের উপর ঝড় ও বজ্রপাতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে টিনের পুরো ঘরটি বিদ্যুতায়িত হয়ে এ পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- ফয়জুর রহমান, তার স্ত্রী শিরি বেগম , মেয়ে সামিয়া , সাবিনা এবং একমাত্র ছেলে সায়েম উদ্দিন । স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাঁদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত শিশু সোনিয়া আক্তার গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন মঙ্গলবার দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে তিন টার দিকে মারা গেছে।
পূর্বজুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রুয়েল উদ্দিন জানান, নিহত ফয়জুর রহমান একজন বাক প্রতিবন্ধী লোক ছিলেন। তিনি সহ তার পরিবারের পাঁচ জন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। পল্লী বিদ্যুতের অবহেলার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। পল্লী বিদ্যুতের আরও ঝুঁকিপূর্ণ লাইন মানুষের বাড়ীর উপর থেকে না সড়ানো হলে এ ধরনের আরো ঘটনা ঘটতে পারে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পল্লি বিদ্যুৎ মৌলভীবাজার কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম মিজানুর রহমান বলেন, ছয় জন নিহতদের ঘটনায় আমরা শোকাহত।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান বিপিএম, পিপিএম (বার) বলেন, এটা একটি মর্মান্তিক ঘটনা। এ ঘটনায় পুরো জেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচজন নিহতের ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হবে।
৬ জনের মৃত্যুর কারণে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। ওই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুস সালাম চৌধুরীকে।
সদস্য হিসেবে রযেছেন মো. ফজলুল করিম, নির্বাহী প্রকৌশলী, পিডিবি এবং দিপংকর ঘোষ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল)।
গঠিত তদন্ত কমিটি সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম দুর্ঘটনায় মৃত পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক।
জেলা প্রশাসন থেকে রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।