লোকমান আহমদ: বিপিএল ২০২৪ এর ঢাকা পর্বের প্রথম ভাগের খেলা শেষ হয়েছে ২৩ জানুয়ারি। জমজমাট সেই পর্বের দুই দিনের বিরতির পর শুক্রবার শুরু হয় সিলেট পর্ব।
সিলেট পর্বে প্রথম দিনের প্রথম ম্যাচে খুলনা টাইগার্স বনাম রংপুর রাইডার্স। গ্যালারি ভরা দর্শক এবং ক্রিকেট প্রেমি সিলেটি দর্শকটা আগ্রহের সাথে খেলা উপভোগ করতে থাকেন। টানা দুই ম্যাচে জয় পাওয়ার পরও একাদশে তিন বিদেশি খেলোয়াড়কে পরিবর্তন করে খুলনা টাইগার্স। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৬০ রান করেছে খুলনা।
যদিও শুরুটা ভালো হয়নি তাদের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মাহাদী হাসানের বলে শূন্য রানে ফেরেন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়।
রানের চাকা সচল রেখেছিলেন শামিম পাটোয়ারি। থার্ডলেগের দিকে বেশ কয়েক চার হাঁকান তিনি। শেষ পর্যন্ত ২২ বলে ৩০ রান করে থামেন তিনি। আগ্রাসী ছিলেন মোহাম্মদ নবি। নবির মারের মধ্যেই একে একে প্যাভিলিয়নে ফেরেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই, নুরুল হাসান, সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান। আজমত ৪, নুরুল ১, সাকিব ২ ও মেহেদী ১২ রান করেন। ফলে জয়ের দৌড়ে অনেকটা পিছিয়ে পড়ে রংপুর।
নবি ৫০ রানে আউট হলে ৮ বল বাকি থাকতেই শেষ হয় রংপুরের ইনিংস। ৩০ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছয় হাঁকান আফগান অলরাউন্ডার। খুলনার হয়ে শানাকা ৪টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান ওয়াসিম জুনিয়র ও মোহাম্মদ নেওয়াজ। এক উইকেট নেন নাসুম আহমেদ।
এর আগে তিন বিদেশির (মোহাম্মদ নেওয়াজ, দাসুন শানাকা ও এভিন লুইস) ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি পায় খুলনা। নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রান করে তারা। টস হেরে ব্যাট করতে নামা খুলনার শুরুটা খুবই বাজে হয়। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের প্রথম ওভারে মাত্র ১ রান উঠাতে সক্ষম হয় তারা, সেটিও লেগ বাই থেকে। ৭ বল খেললেও রানের খাতা খোলার আগেই ক্যাচআউট হন খুলনার অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়।
আজমতউল্লাহকে বিজয়ের মেডেন ওভার দেওয়ার দৃশ্যটি নন-স্ট্রাইকপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিধ্বসী ব্যাটার এভিন লুইস। সেই ওমরজাইয়ের ওপরই পঞ্চম ওভারে চড়াও হন লুইস। মাত্র ৪ বল ফেস করেই ১৭ রান নেন তিনি, পঞ্চম ওভারে সাকুল্যে আসে ১৮ রান। মাহমুদুল হাসান জয় ও আফিফ হোসেন স্কোরবোর্ডে তেমন অবদান রাখতে পারেননি। জয় ৭ ও আফিফ ৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। লুইস ২৫ বলে ৩৭ রান করে আউট হন দলীয় ৬৪ রানে। টপঅর্ডারের ৪টি উইকেট ভাগাভাগি করে নেন হাসান মাহমুদ ও শেখ মেহেদী।
এরপর লঙ্কান অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা ও পাকিস্তানি অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নেওয়াজের ব্যাটে শক্ত ভীত গড়ার চেষ্টা করে খুলনা। পঞ্চম উইকেটে দুজনে মিলে গড়েন ৭৭ রানের জুটি। হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড আউট হয়ে ব্যক্তিগত ৪০ রানে আউট হন শানাকা। ৩৩ বলের ইনিংসে ৫টি চার ও একটি ছয় হাঁকান লঙ্কান অলরাউন্ডার। রিপন মণ্ডলের ওভারে আউট হওয়া নেওয়াজ ৩৪ বলে করেন ৫৫ রান। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। বাকিদের মধ্যে ওয়াসিম জুনিয়র ৭ ও হাবিবুর রহমান সোহান ১ রান করেন।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এসে মাহমুদুল হাসান জয়ের উইকেটও তুলে নেন মাহাদী। আফিফ হোসেনও বেশিক্ষণ টেকেননি। ৬ বলে ৪ রানে হাসান মাহমুদের শিকার হন তিনি। আগের ম্যাচের মতো এভিন লুইস ভয়ঙ্কর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু ২৫ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৭ রানে তাকে বিদায় করেন হাসান।
এরপর পঞ্চম উইকেটে জুটি বাঁধেন দাসুন শানাকা ও মোহাম্মদ নাওয়াজ। শুরুতে ধীরে-সুস্থে খেলে চাপ কমান দলের ওপর। ১৬তম ওভারে এসে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন দুজনই। রিপন মণ্ডলের করা সেই ওভারে আদায় করেন ১৮ রান। ১৩ রান নেন পরের ওভারে। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের করা ১৮তম ওভারে আসে ১৫ রান।
তবে ১৯তম ওভারে শানাকাকে বোল্ড করে ৭৭ রানের এই জুটি ভাঙেন হাসান। ৩৩ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪০ রান করেন শানাকা। তবে ফিফটি তুলে নেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। ৩৪ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৫ রানে রিপনের শিকার হন এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার।