কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন: নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলা পৌরশহরে সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে লাখ টাকা চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্মআহবায়ক আপেল মাহমুদের বিরুদ্ধে। গত বুধবার রাতে ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক মুখলেছুর রহমান বাঙ্গালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এতে তিনি আপেল মাহমুদের নাম উল্লেখ ও আরও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিবাদী আপেল মাহমুদের দাবি অভিযোগ পরস্পর বিরোধী। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের ছোট ভাই মাসকা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বাঙ্গালী সাইদুর রহমান নামে একজনকে রেলে চাকুরী দিবে বলে ১৪ লক্ষ টাকার সমাঝোতা করেন। চাকুরির পূর্বে শর্ত অনুয়ায়ী অর্ধেক দেওয়ার কথা। প্রথমে সাত লাখ ও দ্বিতীয় দফায় দুই লাখ সর্বমোট নয় লাখ টাকা চেয়ারম্যানকে দেন চাকুরীপ্রার্থী। এর জিম্মাদার হন চেয়ারম্যানের বড় ভাই প্রধান শিক্ষক। এই টাকার জন্য প্রধান শিক্ষকের সাথে বেশ কয়েকবার কথাও হয়েছে এবং রাস্তায় দেখা হলে টাকা ফেরতের কথা বলি। এখন প্রধান শিক্ষকের বাসার আশেপাশে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন হামলা করেছি কিনা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।
বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাদী নৌকা প্রতীকের সমর্থক থেকে ভোট প্রার্থনা করেন। অপরদিকে আপেল মাহমুদ ও তার সহযোগীরা ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনের কাজ করেন। নির্বাচন চলাকালীন সময়ে আপেল ও তার সহযোগী ক্যাডার বাহিনী নিয়ে বাদীকে ট্রাক প্রতীকের নির্বাচন করার জন্য প্রচন্ডভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। এতে রাজী না হওয়ায় তাঁর প্রতি চরমভাবে ক্ষিপ্ত হন এবং নির্বাচনের পরে বাদী কিভাবে চাকুরী করে তা দেখে নেওয়ার ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করেন।
নির্বাচনে বাদীর সমর্থিত ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ীর পর হতে কিছুদিন বাদীকে কেন্দুয়া বাজারে এবং থানার পার্শ্বে লাইব্রেরীর সামনে রাস্তায় দেখা হয়। আপেল বলে চাঁদা না দিয়ে শিক্ষকতা করতে পারবেন না এবং বাসায়ও থাকতে দিব না বলে বলিয়া হুমকী প্রদর্শন করে। গত ২৩ জানুয়ারী সন্ধ্যা ৬টার দিকে অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আপেল মাহমুদ তার সঙ্গীদের নিয়ে পৌরশহরের কমলপুর মহল্লায় বাদীর বাসায় গিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। দাবীকৃত টাকা তিন দিনের মধ্যে না দিলে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দেওয়াসহ হত্যা ও জখমের হুমকী দেওয়ার কথা বাদী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.এনামুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।