শার্শা প্রতিনিধিঃ

যশোরের শার্শা থানার ৭নম্বর কায়বা ইউনিয়নের অন্তর্গত বাগুড়ী বেলতলা বাজার। অনেকের কাছে এই এলাকা মাদকের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত। বাগুড়ী বেলতলা বাজার এলাকায় তালিকাভুক্ত একাধিক মাদক মামলার আসামীরা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মাদকের রমরমা ব্যবসা। মাত্র দুই কিলোমিটার পাশেই রয়েছে বাগআঁচড়া পুলিশ ক্যাম্প। এই পুলিশ ক‍্যাম্পের ইনচার্জের ভুমিকা নিয়েও জনমনে উঠেছে নানা রকম প্রশ্ন! এখানে সক্রিয় পুলিশ প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও কিভাবে মাদক কারবারিরা অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মাদক ব‍্যবসা। তালিকা অনুযায়ী এই এলাকায় কারা কারা মাদক ব্যবসা করে তার সব কিছু জানে পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু বছরে দুই একটি লোক দেখানো অভিযান ছাড়া বাস্তবে অজানা কারণে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় না।

সূত্রে জানা গেছে, বেলতলা বাজারে নিলকন্ঠ কুমারের মুদিখানা দোকানের পাশে, ইছাকের চায়ের দোকানের পেছনে আব্দুল গনির বাড়িতে, মোস্তফার চায়ের দোকানের পাশে, ও ইনুচ আলীর দোকানের পেছনে মাসুদের আম বাগানে দিনে এবং রাতে (মাদকদ্রব্য) গাঁজা, ইয়াবা, ও ফেন্সিডিল বেচাকেনা করছে এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারী আব্দুল গনি, গনির স্ত্রী নুরজাহান বেগম, সুমন হোসেন, কিশোর গ‍্যাং এর মূল হোতা মোস্তফা, মোস্তফার মা রাবেয়া ওরফে খাতন, মোস্তফার বোন মোছাঃ কাকুলি, কাকুলির স্বামী সাইফুল ইসলাম, মোছাঃ রিজিয়া ওরফে রিজু, ও ঘর জামাই জাহাঙ্গীর’সহ কয়েকজন। এদের প্রাধান সহযোগী হিসাবে রয়েছে একাধিক মাদক মামলার আসামি ভুতু হাফিজুল। এই হাফিজুল মাদক সিন্ডিকেটের মূল হোতা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একাধিক মাদক মামলার আসামিরা জামিনে এসে পুনরায় মাদক বেচাকেনা করছে এই এলাকাতে। ১০ থেকে ১২ জন মাদক কারবারি বেলতলা বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে মাদক বেচাকেনা করছে। প্রায় সময় মাদক কারবারি ও মাদক সেবীদের মধ্যে বাকবিতন্ডো ও হাতাহাতি মতো সংঘর্ষ হলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার ভয়ে পুলিশের কাছে মুখ খোলেনা। যার কারণে এসব মাদক কারবারীদের নাম রয়ে যায় অজানা। এছাড়াও খরিদ্দাররা মোবাইল ফোনে যে কোনো ধরনের মাদকের অর্ডার করলেই ডেলিভারি ম্যানের মাধ্যমে ভ‍্যানে বা বাইসাইকেল যোগে দ্রুত পৌঁছে দেয়া হচ্ছে তাদের ঠিকানায়। বহন ঝুঁকি ছাড়াই গাজাঁ, ইয়াবা, ফেন্সিডিলসহ নানা রকমের মাদকদ্রব্য পাওয়ায় খুশি হচ্ছে মাদক সেবীরাও।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, এলাকার সংঘবদ্ধ চিহ্নিত একটি কিশোর গ‍্যাং ও একটি মাদক সিন্ডিকেট দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা জমজমাট মাদক ব্যবসা করে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে। এমনকি এলাকার উঠতি বয়সী যুবক ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররাও মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। এই চক্রটির কেউ কেউ চুরি ছিনতাই সহ নানা সন্ত্রাসী কাজের সাথেও জড়িত বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

একটি সূত্র বলছে, থানা পুলিশের সোর্সসহ স্থানীয় নামধারী কিছু নেতা প্রভাবশালী ব্যক্তি ও আড়ালে থাকা কিছু বখাটে নিয়ন্ত্রণ করছে শার্শা থানার বেলতলা বাজার এলাকার এ মাদক ব্যবসা। সচেতন নাগরিকদের মতে পুলিশের পরোক্ষ সহযোগিতা থাকায় এক’রকম প্রকাশ্যে চলছে মাদক বেচাকেনা।

এ প্রসঙ্গে শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম আকিকুল ইসলাম বলেন, আমি খোঁজখবর নিয়ে যারা মাদকের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এবিষয়ে নাভারণ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নিশাত আল নাহিয়ান বলেন, এদেরকে বহুবার ধরেছি, কিন্তু এরা ভালো হয় না, কারণ এরা এলাকা বাসীর সহযোগিতায় মাদক ব‍্যবসা করে, এলাকার মানুষের পৃষ্ঠপোষকতা করতে নিষেধ করেন, আর আমাদের যতটুকু করার ততটুকু করবো।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version