চৈত্র মাস পেরিয়ে বৈশাখের খড়তাপপ্রবাহে পিছঢালা রাস্তা গলে যাওয়া আর তীব্র গরমে মানুষ যখন চারিদিকে দিশেহারা। তেমনই তাপদাহে অতিষ্ট জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রাণীকুল। ঘড়া রৌদ্র তাপদাহে মানাতে পারেনি একটি কোকিল পাখি কুহু কুহু কন্ঠে যার কলতানে মুখরিত হয় চারিদিক। পাখিটি দিশেহারা হয়ে উড়তে উড়তে অটোরিক্সার সাথে থাক্কা লেগে করুণ মৃত্যু হয়। তাকে বাচাঁতে পথচারিরা প্রাণপণ চেষ্টা করলেও অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে সুরের পাখি কোকিল পাখিটি।
রোববার (১৭ এপ্রিল) ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুরের আজমপুর বাজারে যাবার কিছু আগে। ওই পথ দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন লালতীর সীড কোম্পানির ডিভিশনাল ম্যানাজার তাপশ চক্রবর্তী। চলার পথে তিনি দেখতে পান একটি পাখি উড়ন্ত অবস্থায় হঠাৎ করে চলাচলরত একটি অটোরিক্সার সাথে থাক্কা খেয়ে মাঠিতে লুটিয়ে পড়ে ডানা ঝাপটাচ্ছে। তখন তাপশ চক্রবর্তী মোটরসাইকেলটি থামিয়ে পাখিটির কাছে গিয়ে দেখেন জ্ঞান হারিয়ে পড়ে আছে। এরপর এ পথ দিয়ে চলাচলরত আরো কয়েকজন এগিয়ে আসেন। পরে গুরুতর আহত পাখিটির প্রাণ বাচাঁতে প্রাণপণ চেষ্টা চালান তারা। পাখিটির প্রাণ বাঁচাতে পথচারিদের নিয়ে তাপশ চক্রবর্তী পাশের ডুবা থেকে পানি এনে পাখিটিকে খাওয়ান এবং পাখিটির মাথায় ঢালেন। আবার কেউ কেউ পাখিটিকে বাতাস করেন। এক পর্যায়ে জ্ঞানহীন পাখিটি চোখ মেলে মানুষ গুলোর দিকে তাকায়। পাখিটির জ্ঞান ফিরে আসায় তাপশ চক্রবর্তীসহ অন্যরা সবাই খুশি হয়। পরক্ষনেই পাখিটি আবার জ্ঞান হারিয়ে চোখ বন্ধ করে দেয়। এরপর আস্তে আস্তে পাখিটির দেহ থেকে প্রান ভ্রমরা চলে যেতে থাকে এদিকে পাখিটি মৃত্যুর কুলে ঢলে পড়ে। সুরের পাখি কোকিলটির এমন নির্মম মৃত্যু দেখে সবাই নির্বাক হতভম্ব হয়ে পড়েন। এ ঘটনাটি সন্ধ্যার সময় তাপশ চক্রবর্তী তার যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পাখিটির নির্মম মৃত্যের বিষয়টি প্রকাশ করেন। পাখিটির ছবি দিয়ে তিনি লিখেন, কোকিলটির এমন মৃত্যু দেখে মুহূর্তের মধ্যেই সবার চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। এতেই বুঝি প্রকৃতির আর প্রাণির প্রতি মানুষের ভালোবাসার নিদর্শন বা বহিঃপ্রকাশ। তাপশ চক্রবর্তী আরো লিখেন, ভালোবাসা মানবতা, মানবিকতা এখনো বেঁচে আছে, পরিবেশের পরিসীমা সংকীর্ণ হলেও লড়াই করছে প্রাণপণ।