মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

জন্মনিবন্ধন সংশোধনে ভোগান্তির অভিযোগ

যা যা মিস করেছেন

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় জন্মনিবন্ধন সনদ সংশোধন করতে গিয়ে পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের নাগরিকদের সীমাহীন ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে। এতে ভোক্তভোগীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তাদের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও নির্ধারিত ফি দিয়ে অনলাইনে সংশোধনের জন্য আবেদন করেও যথাসময়ে তারা জন্মনিবন্ধন সদন পাচ্ছেন না। যার কারণে তারা তাদের প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারছেন না। ফলে তাদের দিনের পর দিন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধরনা দিতে হচ্ছে। এদিকে যারা মোটা অংকের টাকা দিচ্ছেন তাদের জন্মসনদ দ্রুত সংশোধন করে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি বড়লেখা পৌরসভা, বড়লেখা সদর ও দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ও দক্ষিণভাগ উত্তর এবং সুজানগরসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, জন্মনিবন্ধন সনদের জন্য অনেকে পৌরসভা ও ইউনিয়ন অফিসে এসেছেন। তাদের কেউ নতুন জন্মনিবন্ধন নিতে এসেছেন। কেউ বা সংশোধনীর জন্য এসেছেন। সংশোধনী করতে আসা নাগরিকদের কারও সন্তানের নামে ভুল, কারও মা-বাবার নামে ভুল, কারও লিঙ্গ পরিচয়ে ভুল রয়েছে। এসময় অনেকে অভিযোগ করেন তারা প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও নির্ধারিত ফি দিয়ে অনলাইনে সংশোধনের জন্য আবেদন করেও জন্মসনদ পাননি।

বড়লেখা সদর ইউনিয়নে হিনাইনগর গ্রামের বাসিন্দা খন্দকার সাহেদ হাসানকে পেয়ে কথা হয়। তিনি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার ভাতিজির জন্মসনদে নামের ভুল সংশোধনের জন্য গত ০৬ সেপ্টেম্বর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নির্ধারিত ফি দিয়ে অনলাইনে আবেদন করেছি। পরে সেটির কপি ইউনিয়নে জমা দিয়েছি। এরপর থেকে অন্তত ৭ দিন ইউনিয়নে গিয়েছি। ইউনিয়নে যাওয়ার পর দায়িত্বশীলরা বলেন ইউএনও অফিসে যেতে। সেখানে দুইদিন গিয়েও কোনো কাজ হয়নি।

জন্মনিবন্ধন সংশোধন করতে গিয়ে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপির আরেঙ্গাবাদ গ্রামের বাসিন্দা মারুফ হোসাইন বলেন, আমার ভাতিজা-ভাতিজির জন্ম সনদে নামে ভুল থাকায় তা সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করে একাধিকবার ইউনিয়ন ও ইউএনও অফিসে গিয়েছি। পরে প্রায় ৬ মাস পর তা সংশোধন হয়েছে।

উদ্যোক্তারা যাদের কাছ থেকে টাকাও নিচ্ছেন তাদের কাজ দ্রুত করে দিচ্ছেন-এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আরেঙ্গাবাদ গ্রামের আমার খালাতো ভাই আশুকুর রহমানের কাছ থেকে তার ছেলে-মেয়ের জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধনের জন্য ৬ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। আমার এক ভাতিজার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে গিয়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কারা টাকা নিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়নের দায়িত্বশীলরা নিয়েছেন। এরকম অনেক মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। আমি একটু রাগারাগি করায় তারা আমার কাছ থেকে কোনো টাকা নিতে পারেনি। ’
বড়লেখা পৌরসভার পাখিয়ালা এলাকার বাসিন্দা শাহরিয়ার ফাহিম বলেন, আমার ও আমার মা-বোনের জন্মসনদে নামে ও বয়সে ভুল ছিল। সংধোশন করলাম। সংশোধিত জন্মনিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করেছি। সেটি দিয়ে বিদেশ যাওয়ার জন্য আবেদন করেছি। দেড় বছর থেকে এখন দেখি অনলাইনে সংশোধিত তথ্য দেখাচ্ছে না। এখন সংশোধিত তথ্য অনলাইনে না দেখালে আমাদের আবেদন বাতিল করে দিতে পারে। অনেক দিন পৌরসভায় গিয়ে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানালাম। তারা বলেন মৌলভীবাজারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়ে ঠিক করিয়ে আনতে। এখনও তা ঠিক হয়নি। এদিকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বড়লেখা পৌরসভার মেয়র ও সংশ্লিষ্ট ইউপির চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তারা। তারা জানিয়েছেন, জন্মনিবন্ধন সংশোধনের আবেদনের ক্ষেত্রে তারা নির্ধারিত ফি নেন। এর বাইরে কারও কাছ থেকে অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া হয় না। ইউনিয়নের নাগরকিদের আবেদন ইউএনও অফিস থেকে অনুমোদন হয়। তা যাচাই-বাছাই হতে একটু সময় লাগছে। আর বড়লেখা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পৌরসভার নাগরিকদের জন্ম সনদ সংশোধনের আবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অনুমোদন হয়।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ বলেন, আগের ইউএনও বদলি হওয়া আর নতুন ইউএনও হিসাবে আমার যোগদানের মাঝখানে জন্মনিবন্ধন সংশোধনের অনেক আবেদন জমা পড়েছে। এজন্য একটু সময় লাগছে। এরপরও যাদের খুব বেশি জরুরী তিনি তার ইউপির চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানাবেন। চেয়ারম্যান আমাদের কাছে তাকে পাঠিয়ে দিলে আমরা তা সাথে সাথে করে দেব।

টাকা আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ইউনিয়নে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়ে কারও কোনো অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security