শিক্ষার্থীদের সাথে মুক্ত আলোচনায় শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফি কমানোর আশ্বাস দিলেও দীর্ঘ তিন মাসেও ফি কমানোর বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ উপাচার্যের আশ্বাস এবং বাস্তবতায় মিল খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। বিশেষ করে সদ্য স্নাতক সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। চাকরি, বিদেশ গমনসহ বিভিন্ন কারনে সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে গেলে তাদেরকে পূর্বনির্ধারিত ফি অনুযায়ীই বিগত দুই সেমিস্টারের সকল অর্থ প্রদান করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে আইন বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতক সম্পন্নকারী শিক্ষার্থী শামস জেবিন বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অতিরিক্ত ফি গ্রহণ করা হতো। সর্বশেষ গত অক্টোবরে শিক্ষার্থীরা ফি কমানোর দাবিতে আন্দোলন করে এবং উপাচার্য স্যার মুক্ত আলোচনায় আশ্বাস দেন ফি কমানো হবে। তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যায় কিন্তু দীর্ঘ তিন মাসেও আমরা উপাচার্যের আশ্বাসের বাস্তবায়ন দেখতে পাইনি। প্রশাসন এখনও শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ফি নির্ধারণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেনি এবং আমরা যারা স্নাতক সম্পন্ন করেছি তারা সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে গেলে আমাদের নিকট পূর্বের ফি-ই দাবি করা হচ্ছে।’
এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘অনেকেরই চাকরি, বিদেশ গমন সহ বিভিন্ন কারণে জরুরি ভিত্তিতে সার্টিফিকেট প্রয়োজন হচ্ছে এবং এসকল ক্ষেত্রে রীতিমতো অতিরিক্ত ফি দিতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হচ্ছে। তাই আমরা চাই দ্রুত সকল অযৌক্তিক ফি বাতিল করে এবং শিক্ষা ব্যয় কমিয়ে নতুন ফি নির্ধারণ করা হোক।’
হল ফি সংক্রান্ত ভোগান্তির বিষয়টি উল্লেখ করে কৃষি বিভাগের শিক্ষার্থী মো: মাসুকুর রহমান বলেন, ‘আমি শেখ রাসেল হলের একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। নিয়ম অনুসারে প্রতিটি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীকে নির্ধারিত বেতন পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু আমাদের হলগুলোর বেতনের সাথে, সংস্থাপন চার্জ অর্থাৎ পানি,বিদ্যুৎ বিলের চার্জ যুক্ত হয়ে মোট ৩৫০ টাকা মাসিক বেতন পরিশোধ করতে হচ্ছে। দেশের আর কোন পাবলিক ভার্সিটির আবাসিক শিক্ষার্থীদের এত বেশি বেতন পরিশোধ করতে হয় বলে আমার জানা নেই। ইতোপূর্বে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কথা দিয়েছিলো ফি কমানো হবে কিন্তু এ বিষয়ে এখনও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’
এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘প্রশাসনের নিকট প্রত্যাশা থাকবে, ফি পুন:নির্ধারণের বিষয়টিকে ঝুলিয়ে না রেখে অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই বেতন কমিয়ে আনার জন্য। কারণ বিষয়টি এখনই সমাধান না করলে পরবর্তীতে একসাথে একটি বড় অংকের টাকা বেতন হিসেবে দিতে হবে, যা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য কঠিন হয়ে যাবে। এছাড়া কাগজ-পত্র উত্তোলনেও সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে।’
এ বিষয়ে বিষয়ে উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন,‘করোনা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীদের সাথে পুনরায় আলোচনায় বসে ফি নির্ধারণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুযোগ হয়নি। একারণে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ফি গ্রহণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে ফি কমানো হলে এসকল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেয়া হবে।’