বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

আদালতের অনুমতিতে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশনে জনসমক্ষেই স্বেচ্ছামৃত্যু!

যা যা মিস করেছেন

সারাবিশ্বেই স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে একটা বিতর্ক আছে। অনেক মানুষ যারা রোগাক্রান্ত, বয়সের ভারে ন্যুব্জ, তাঁরা নিজের ঠিক করা সময়েই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে চান। কিন্তু সেখানে আইনি বাধা দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু সমস্ত আইনি বাধা অতিক্রম করে স্বেচ্ছামৃত্যু নিলেন কলম্বিয়ার বাসিন্দা ভিক্টর এসকোবার। আদালতের অনুমতিতে আত্মীয়দের উপস্থিতিতে তিনি স্বেচ্ছা মৃত্যুবরণ করলেন।

দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। কৃত্রিমভাবে শ্বাস নিতে হত তাকে, হুইলচেয়ার ছাড়া চলাফেরা পারতেন না। বস্তুত চিকিৎসা যন্ত্র ও পরিবারের সদস্যদের সাহায্যেই বেঁচেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছামৃত্যু চেয়েছিলেন তিনি। তারই ব্যক্তিগত চিকিৎসকের প্রাণাঘাতী ইঞ্জেকশনে হাসি মুখে সকলকে বিদায় জানান ভিক্টর।

মৃত্যুর দুই ঘণ্টা আগেও তৃপ্ত দেখাচ্ছিল ৬০ বছর বয়সি ভিক্টরকে। এভাবে মৃত্যুবরণকে জীবনের জয় বলেছেন স্বেচ্ছায় আত্মীয়-বন্ধুদের বিদায় জানানো মানুষটা। কারণ প্রাত্যহিক কষ্টের জীবন থেকে অনন্ত মুক্তিই তো চেয়েছিলন তিনি। স্বেচ্ছামৃত্যুর আগে নিজের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের একটি ভিডিও রেকর্ড করেন ভিক্টর। যা ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমগুলিকে পাঠিয়ে দেন তিনি।

 

ওই ভিডিওতে ক্যাথলিক ভিক্টরকে বলতে শোনা যায়, একটু একটু করে সকলেরই একদিন ফেরার সময় আসবে। অতএব, আমি আজ বিদায় বলব না, বরং বলব, আবার দেখা হবে! তিলে তিলে আমরা সকলেই তো ঈশ্বরে সমাপ্ত হব একদিন।

ভিক্টরের আইনজীবী টুইট করে জানান, কলম্বিয়া ক্যালি শহরে চিকিৎসকদের উপস্থিতিতেই স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করেছেন ভিক্টর এসকোবার। অন্তিম ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আত্মীয়দের মাঝখানে হাসিমুখে ভিক্টর। তার মধ্যে কোনওরকম অস্থিরতা দেখা যায়নি। এরপরেই তাকে উপস্থিত চিকিৎসক প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন দেন।

গোটা বিশ্বেই স্বেচ্ছামৃত্যু নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। একজন মানুষের অবস্থা বিশেষে স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার থাকা উচিত কিনা তা নিয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে মত রয়েছে। ১৯৯৭ সালে কলম্বিয়া সরকার বহিরাগত সাহায্যে (যেমন প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশনে) স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকারকে বাতিল করেছিল। যদিও ২০২১ সালে দেশটির উচ্চ আদালত স্বেচ্ছায় মৃত্যুর অধিকারে শিলমোহর বসায়।

তবে কারা, কেন সেই অধিকার পাবেন, তার উপরে নির্ভর করছে আদালতের অনুমতি পাবার বিষয়টি। এক্ষেত্রে ভিক্টর একটি জটিল রোগে ভুগছিলেন। বেঁচে থাকতে হলে অন্যের দাক্ষিণ্যে কৃত্রিমভাবে শ্বাসগ্রহণ করা তার উপায় ছিল না তার। ফলে আদালতে ভিক্টরের আবেদন গ্রাহ্য হয়।

উল্লেখ্য, ভিক্টর এসকোবারের স্বেচ্ছামৃত্যু আরও একদিক থেকে নজিরবিহীন। কারণ কলম্বিয়াই প্রথম দেশ, যারা একজন রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীকে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিল। সাধারণত আত্মহত্যার তীব্র বিরোধী ক্যাথলিক চার্চগুলি। বস্তুত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের বিরুদ্ধে গেল ভিক্টরের এসকোবরের শেষইচ্ছে বা ইচ্ছেমৃত্যু।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security