সোমবার, মে ৬, ২০২৪

বাংলাদেশে রেমিটেন্সের রেকর্ড প্রবাহ এসেছে

যা যা মিস করেছেন

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা ও নানা সংকটের কারণে টানা ছয় মাস কমেছে প্রবাসী আয়। তারপরও সদ্য সমাপ্ত বছরে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। ২০২১ সালে রেকর্ড দুই হাজার ২০৭ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগে কোনো বছর এত বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসেনি।

কোভিডের কারণে প্রবাসীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছেন। অনেকে চাকরি হারিয়ে বা ব্যবসা বন্ধ করে সব অর্থ পাঠিয়ে দেশে ফিরেছেন। এছাড়া করোনা প্রাদুর্ভাবে দেশে টাকা পাঠানোর অবৈধ চ্যানেলগুলো বন্ধ ছিল। তাই বাধ্য হয়ে সবাই ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠিয়েছেন। ফলে গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি ছিল।

এখন ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ভ্রমণসহ বহির্বিশ্বের সঙ্গে যাতায়াত বাড়ছে। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া জমানো টাকা না পাঠিয়ে অনেকে আবার জমাতে শুরু করেছেন। আবার সশরীরে যাওয়া-আসা শুরু হওয়ায় অনেকে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে আসছেন। ফলে গত বছর শেষ ছয় মাসে বৈধ পথে রেমিট্যান্স কমেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সব শেষ ডিসেম্বর মাসে ১৬৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ফলে সব মিলিয়ে সদ্য সমাপ্ত ২০২১ সালে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২ হাজার ২০৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লাখ ৮৯ হাজার ৩৬৭ কো‌টি টাকার বেশি; (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা ধরে)। যা ইতিহাসে একক বছরে  সর্বোচ্চ রে‌মিট্যান্স আহরণ। এর আগের সর্বোচ্চ রে‌মিট্যান্স এসেছিল ২০২০ সালে ২ হাজার ১৭৪ কোটি ডলার এবং ২০১৯ সালে এক হাজার ৮৩৩ কোটি ডলার।

গত বছর রেমিট্যান্স বাড়লেও অর্থবছর বিবেচনায় এখনো নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে প্রবাসী আয়। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ২৩ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময় ছিল এক হাজার ২৯৪ কোটি ডলার। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ২৭০ কোটি ডলার বা ২০ দশমিক ৯১ শতাংশ।

এদিকে বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু গেল বছরের শেষ দিকে টানা ছয় মাস রেমিট্যান্স প্রবাহ কমায় নতুন বছর থেকে এটি আরও বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, রেমিট্যান্স বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক এলাকায় কত বড় ভূমিকা রাখে সেটি অর্থনীতিবিদরা বুঝবেন এবং তারা আমার সঙ্গে একমত পোষণ করবেন যে, এটি অসাধারণ ভালো কাজ হয়েছে। আমরা এটাকে সঠিক চ্যানেলে আনার চেষ্টা করছি। আমরা রেমিট্যান্স পাচ্ছিলাম না, কারণ সেটা ইনফরমাল চ্যানেলে চলে যাচ্ছিল। সেই চ্যানেলটাকে অনুৎসাহিত করব এবং ফরমাল চ্যানেলেই পুরোটা অর্জন করতে চাই। সেজন্যই প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২.৫ শতাংশ করা হয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর। আশা করি এই অর্থবছরে ২৬ বিলিয়ন অর্জন হবে।

২০২১ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসে ১৯৬ কোটি ১৯ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৭৮ কোটি ডলার, মার্চে ১৯১ কোটি, এপ্রিলে ২০৬ কোটি ৭৬ লাখ, মে ২১৭ কোটি, জুন মাসে ১৯৪ কোটি, জুলাই ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ, আগস্টে ১৮১ কোটি, সেপ্টেম্বর মাসে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বর ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ এবং ডিসেম্বরে ১৬৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

গত ২০২০-২১ অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন ছিল। ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরের ১২ মাসের মধ্যে সাত মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসে।

দ্যা মেইল বিডি/খবর সবসময়

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

More articles

সর্বশেষ

x  Powerful Protection for WordPress, from Shield Security
This Site Is Protected By
Shield Security