এম এইচ রনি, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে চার দিন আগে নিখোঁজ হওয়া এক গৃহবধূর লাশ বাঁশঝাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।পরকীয়ার জেরে পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (২৬- নভেম্বর) সকালে উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর পশ্চিম পাড়া (খরখরিয়াপাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত লাভলী বেগম (২৪) দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মন্মথপুর ইউনিয়নের দাগলাগঞ্জ দলবাড়ীপাড়ার বাবলু মন্ডলের মেয়ে।পরিবারিক সূত্রে জানা যায় ১২ বছর আগে লাভলীর বিয়ে হয়েছে পাশের নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর পশ্চিম পাড়া (খরখরিয়াপাড়া) গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে দিনমজুর রেজাউল করিমের সঙ্গে। তাদের সংসারে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
লাভলী বেগমের মা মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই রেজাউল তেমন কাজ কর্ম করে না। সংসারটা আমার মেয়েই অনেক কষ্ট করে চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি জামাই তার ভাউজের (ছোট ভাইয়ের বউ) সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছিল।’
লাভলীর মা আরও বলেন, ‘ছোট নাতনিটা বলেছে তার মাকে বাবা, দাদা ও দাদীরা মিলে পিটিয়ে মেরেছে। লাশ কয়েকদিন থেকে ঘরের ছাদে (সিলিং) রেখে নিখোঁজ হয়েছে বলে প্রচার করে। পরে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় শুক্রবার ভোরে বাঁশঝাড়ে নেয়া হয়েছে। একথা বলার কারণে এখন মেয়ের ছেলে-মেয়েকে (নাতি ও নাতনি) আমাদের কাছে আসতে দিচ্ছে না। পাশের বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে।’
এলাকাবাসী জানায়, চার দিন থেকে লাভলী বেগমকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় সকালে বাঁশঝাড়ে প্রাকৃতিক কাজ সারতে গিয়ে এক মহিলা লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে লোকজন এলাকাবাসী উপস্থিত হয়। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি লাশ ঘন বাঁশঝাড়ের মধ্যে পড়ে আছে। অনেক কষ্টে বাঁশ কেটে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। জড়িত সন্দেহে স্বামী ও শশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। অন্যরা পলাতক রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে