হেঁটে হজ করা দিনাজপুরের একমাত্র হাজি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আর নেই। রোববার (১০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ইন্তেকাল করেছেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে হাজি মহিউদ্দিন রোববার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯ নম্বর আস্করপুর ইউনিয়নের খসরুর মোড়ে তৃতীয় মেয়ের বাসায় ইন্তেকাল করেন।
আজ সোমবার বাদ জোহর রামসাগর জাতীয় উদ্যান বায়তুল আকসা জামে মসজিদের সামনে মো. মহিউদ্দিনের জানাজা হবে। এরপর রামসাগর দীঘিপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হবে।
আশস্করপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে মো. মহিউদ্দিন স্ত্রী, চার মেয়ে, দুই ছেলে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
হাজি মহি উদ্দিন ১৯০৬ সালে ১০ আগস্ট দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯ নম্বর আস্কপুর ইউনিয়নের রামসাগর দিঘিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। । তার বাবার নাম মরহুম ইজার উদ্দিন।
উল্লেখ্য, মোহাম্মদ মহি উদ্দিন ১৯৬৮ সালে হজ করেছিলেন। সেই সময় তার কাছে হজ করার মতো আর্থিক সার্মথ্য ছিল না। অদম্য ইচ্ছা নিয়ে আর এলাকাবাসীর সহায়তায় হেঁটেই করতে যান তিনি। তার হজ যাত্রায় সময় লেগেছিল ১৮ মাস।
জানা যায়, দীর্ঘ পথে তার যাওয়া ও আসায় সময় লাগে ১৮ মাস। এক সাক্ষাৎকারে তিনি শুনিয়েছিলেন তার সেই হজে যাওয়ার ভ্রমণ কাহিনী। তিনি বলেন, ‘বাসা থেকে প্রথমে ঢাকায় যাই, তারপর পতেঙ্গা পৌঁছাই। পতেঙ্গা থেকে জাহাজে সিংহল (শ্রীলংকা) হয়ে পাকিস্তান যাই। এরপর একে একে আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, জর্দান, মিশর, কুয়েত হয়ে সৌদি আরব পৌঁছাই। সেখানে মক্কা হয়ে সর্বশেষে দেখা পেলাম মদিনার। মদিনায় পৌঁছে তিনমাস খাদেমের পদধূলি নিয়েছি। খাদেমের নাম ছিলো ইসমাইল।
তিনি আরও বলেন, সবাই বিমানে না যেয়ে হেঁটে হজ করলে বহুদেশে দেখতে পারবেন। ইরাক, ইরানে চলে গাঁধার হাল। এই হালিদের সঙ্গে গল্পগুজব করতে পারবেন। তাদের পদধূলী নিতে পারবেন। এতে আশা করি বহু নেকি পাওয়া যাবে। ধান চাষ করলে যেমন ধান পাওয়া যায়, বিষয়টি ঠিক তেমনি। জমি না চাষ করলে যেমন ধান পাওয়া যাবে না, ঠিক তেমনই হজ চাষ না করলে নেকি পাওয়া সম্ভব না।