লেখক পান্না কুমার রায় রজত : বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার Foreign Exchange Reserves বলতে কোন দেশের কেন্দ্রিয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রায় গচ্ছিত সম্পদের মজুদকে বোঝায়। এভাবে গচ্ছিত বৈদেশিক মুদ্রা প্রধানত আমদানি মূল্য এবং বৈদেশিক ঋণ ও ঋণের সুদ ইত্যাদি পরিশোধে ব্যবহৃত হয়। পণ্য ও সেবা রপ্তানি ও বিদেশে কর্মরত বিভিন্ন শ্রেণি পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিগণের স্বদেশে পাঠানো অর্থ যাকে Remittance রেমিট্যান্স বলা হয় তা থেকে বৈদেশিক ঋণবাবদ প্রাপ্ত অর্থ এবং সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের অর্থ। সাধারণত শক্তিশালী বা অনমনীয় মূদ্রা ইংরেজি Hard Currency যা আন্তর্জাতিক বাজারে সহজে বিনিময়যোগ্য যেমন মার্কিন ডলার, ব্রিটিশ পাউন্ড, ইউরো, ইয়েন ইত্যাদি। আর তা দিয়েই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে তোলা হয়।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দেশের অর্থনীতির ঘাত প্রতিরোধ ক্ষমতা (Shock Resistance) ও নমনীয়তা Flexibility বৃদ্ধি করে। দেশীয় মুদ্রামানের দ্রুত অবমূল্যায়ন Devaluation ঘটলে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহার করে ঘাত প্রতিঘাত প্রতিরোধ করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা যখন কমে যায় ও বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ যখন বেড়ে যায়, তখন উদ্ধৃত্ত অর্থ মজুদ থাকে। আর বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াকে আমরা বলে থাকি রিজার্ভ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী সাধারণত কোন দেশের তিন মাসের বৈদেশিক মুদ্রার দায় মেটানোর মতো মজুদ থাকতে হয়।
যথেষ্ট পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা থাকা মানে একটা অর্থনৈতিক শক্তি। কারণ বিশ্বায়নের কারণে অন্য দেশের সঙ্গে আমাদের নানা ধরণের লেনদেন সম্পন্ন করতে হয়। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকলে আমরা স্বস্তি অনুভব করি। আমদানি ব্যয় মেটানো, বৈদেশিক ঋণের সুদ প্রদান ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়। সেটার যোগান না থাকলে একটা দেশ সংকটে পড়ে যায়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকার মানে হলো আমাদের আমদানি সক্ষমতা আছে।
বৈদেশিক মুদ্রার যথেষ্ট সঞ্চয় যদি থাকে তখন বৈদেশিক ঋণ নেয়ার সময় কম চিন্তা করতে হয়। পাশাপাশি অনেক ব্যবসায়ীও বিদেশী ব্যাংক থেকে ঋণ নেন সেটাও, বিদেশী মুদ্রায় পরিশোধ করতে হয়। যেসব আমদানি করা হয়, সেই আমদানির মূল্য বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হয়। সেটার জন্য যে কোন দেশের যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় থাকা দরকার। ফলে আমদানি নিয়ে ও চিন্তা করতে হয় না। বাংলাদেশের মতো দেশে রপ্তানির তুলনায় আমাদের আমদানি বেশি হয়। ফলে এ ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেশি থাকা দরকার। প্রতিটি দেশের আপদকালীন আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখা হয়। বিভিন্ন দেশ রক্ষিত এই রিজার্ভের অর্থের বিপরীতে খুব সামান্যই মুনাফা পায়। ৯০ দশকে এশিয়া অঞ্চলে সংকট দেখা দিলে থাইল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর রিজার্ভ থেকে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ঋণ দিয়েছিল। এরপর ১৯৯৬ সালে একটি নীতিমালা করে আইএমএফ সেখানে বলা হয়, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করা ঋণ রিজার্ভে দেখানো যাবে না।
স্থানীয় মুদ্রার পাশাপাশি বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে খেলাপী হওয়ার নজির বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছ্ েফলে রিজার্ভ থেকে নেওয়া ঋণ খেলাপী হলে কী হবে! সূত্র মতে, দ্বি-পক্ষীয় চুক্তির বিপরীতে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রিয় ব্যাংক থেকে অর্থ নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ প্রদান করবে। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করে সুদসহ কেন্দ্রিয় ব্যাংকে জমা দেবে ব্যাংকগুলো। কোনো কারণে গ্রাহক খেলাপি হলে বা ব্যাংক নির্দিষ্ট সময়ে অর্থ ফেরত না দিলে কেন্দ্রিয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চলতি হিসাব থেকে কেটে নেওয়া হবে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ খোয়া যাওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। রিজার্ভ জাতীয় সম্পদ। এটা রাখা হয় মুনাফা করার জন্য নয়, বিপদে আপদে আমদানিতে ব্যবহারের জন্য।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অর্থ সরকারি প্রকল্পে ব্যবহার করার সুযোগ তৈরি করেছে সরকার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কেন্দ্রিয় ব্যাংকের সম্পদ। লেনদেনের ভারসাম্য প্রতিকুল হলে বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক মুদ্রার দায় পরিশোধের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে রিজার্ভ। এটি কোনো দেশের বৈদেশিক দায় পরিশোধের অর্থনৈতিক সক্ষমতার ও নির্দেশক। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের তথ্য মতে, এশিয়ার কিছু উন্নত দেশে রিজার্ভের অর্থ ব্যবহারের বেশি নিদর্শন রয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া ও হংকং।
বাংলাদেশের এই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার রেকর্ড রিজার্ভের কয়েকটি কারণ আছে। বিদেশে কর্মরত প্রবাসীরা এই সময়ে বাড়িতে বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন। অনেকে বিদেশে আয় করে সঞ্চিত অর্থ নিয়ে দেশে চলে এসেছেন তাই রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। রেমিট্যান্স আয়ে সরকার ২ শতাংশ প্রণোদনা রাখায় বৈধ পথে আসছে। করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির থাকায় আমদানি পণ্যের ব্যবহার ও চাহিদা কমেছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা ও সাশ্রয় হয়েছে। পাশাপাশি রপ্তানি অব্যাহত থাকায় বৈদেশিক মুদ্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। বড় ধরণের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড স্থগিত হয়ে থাকায় ব্যাংকে জমা থাকা বৈদেশিক মুদ্রার খরচ বৃদ্ধি হয়নি।
কেন্দ্রিয় ব্যাংকে গচ্ছিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুতের অর্থ দিয়ে সরকারের অগ্রাধিকার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ দেওয়া হবে। সরকারের গ্যারান্টিতে বৈদেশিক মুদ্রায় এ ঋণ দিতে বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (বিআইডিএফ) বা বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল গঠন করা হয়েছে। তহবিলটির বার্ষিক বিনিয়োগ লক্ষমাত্রা ২০০ কোটি ডলার। সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। এর বাইরে অন্য কোন ফি বা চার্জ আদায় করা যাবে না। সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক ঋণের বিকল্প উৎস হিসাবে রিজার্ভ থেকে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো এ ধরণের তহবিল গঠন এটাই প্রথম। রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ দেবে সোনালী ব্যাংককে। সোনালী ব্যাংক দেবে অগ্রাধিকার পাওয়া অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পকে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকল্পের সম্ভাবনা ও ঝুঁকি তদারকি করবে। প্রকল্পকে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে হবে। দেশি বিদেশী যেসব উদ্যোক্তা দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করবে, তাদের এ প্রকল্প থেকে ঋণ দেয়া হবে।
রিজার্ভ থেকে প্রথম ঋণ প্রদান করা হচ্ছে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেন্যান্স ড্রেজিং কর্মসূচী। গত ১৮ মে ২০২১ মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সোনালী ব্যাংক ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর তার সক্ষমতার শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছে। কিন্তু দেশে বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। ফলে বন্দরগুলোর ওপর বাড়ছে চাপ। তৃতীয় সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠা করা তাই জরুরী হয়ে পড়েছে।
২০১৩ সালে পটুয়াখালী জেলার রাবনাবাদ চ্যানেলে পায়রা বন্দর নামে দেশের তৃতীয় সমুদ্রবন্দরের উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। জানা যায়, ২০৫০ সাল নাগাদ দেশে কনটেইনারবাহী কার্গো পরিবহনের চাহিদা হবে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুনের বেশি। আর খননের মাধ্যমে রাবনাবাদ চ্যানেলের গভীরতা ১০ দশমিক ৫ মিটারে উন্নীত করা সম্ভব। এর ফলে বিপুল সংখ্যক বিদেশি জাহাজ এই বন্দরে আসবে এবং দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে নতুন মাত্রা সংযোজিত হবে। এছাড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে পায়রা বন্দর ৫ হাজার ৪৩০ কোটি টাকার ঋণ পাবে। ১০ বছর মেয়াদে তা দেবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক লিমিটেড। এর মধ্যে তিন বছর গ্রেস পিরিয়ড। সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশী টাকা দিয়ে ইউরো কিনে এই ঋণ দিবে। মোট ১১টি কিস্তিতে দেওয়া হবে অর্থ। ঋণের বিপরীতে সুদ দিতে হবে ২ শতাংশ। এর মধ্যে ১ শতাংশ বাংলাদেশ ব্যাংক ও ১ শতাংশ সোনালী ব্যাংক পাবে। ২০৩১ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে ঋণের অর্থ পরিশোধ করবে পায়রা বন্দর। প্রতি বছর ৪ কিস্তি হিসেবে মোট ৪০ কিস্তিতে ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে হবে। সরকার বিআইডিএফ নামে রিজার্ভের অর্থ বিনিয়োগ সংক্রান্ত উন্নয়ন তহবিল গঠন করে দেশের অর্থনীতিকে আর ও স্বাবলম্বী করার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা আমাদের অর্থনীতির চাকাকে আর ও বেগবান করবে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রিয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাধারণত অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পে বাস্তবায়নের বৈদেশিক মুদ্রার যোগান উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ হিসাবে অর্থায়ন করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে এসব প্রকল্পে অর্থায়ন করতে এর তাত্তি¡ক ও প্রায়োগিক বিষয়াদি পর্যালোচনাসহ দেশের সম্ভাব্য আমদানি ও অন্যসব বৈদেশিক দায় পরিশোধের সক্ষমতা সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা ও ঝুঁকির বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ পুরোপুরি উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে উন্নীত করতে ব্যাপক হারে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন এবং বৈদেশিক দায় পরিশোধের সক্ষমতার মানদন্ড হিসাবে দেশে স্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সার্বক্ষণিকভাবে বজায় রাখা জরুরী। বেশি রিজার্ভ থাকলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সঞ্চার হয়। বর্তমানে যে রিজার্ভ আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ০৩ মে ২০২১ইং দিনশেষে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার বা ৪ হাজার ৫১০ কোটি ডলার। কেন্দ্রিয় ব্যাংকের এ রিজার্ভ দিয়ে আগামী ১২ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। এতে আরও বলা হয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে স্থানীয়ভাবে বিনিয়োগে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও বিশেষ বিবেচনায় শুধু সরকারের কৌশলগত অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচিত প্রকল্পে সরকারি গ্যারান্টির বিপরীতে অর্থায়ন করা হবে। এক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্পের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে গৃহীত ঋণের সুদহার আপাতত দৃষ্টিতে কম মনে হলেও এসব ঋণের ক্ষেত্রে প্রায়ই উন্নয়ন সহযোগীদের কথামতো পরামর্শক নিয়োগ সুদ ছাড়া নানা ধরনের ফি ও চার্জ আরোপ, অনপযুক্ত প্রযুক্তি ও পণ্যক্রয়সহ অন্যসব অস্বস্তিকর শর্তারোপের বাধ্যবাধকতায় পড়তে হয়। ফলে প্রকৃত ঋণ ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। এসব দিক বিবেচনায় সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক ঋণের বিকল্প উৎস হিসাবে রিজার্ভ থেকে বিনিয়োগ করলে সুফল মিলবে।
রিজার্ভ থেকে নেয়া অর্থ কোন প্রকল্পে দেয়া হচ্ছে তা সঠিকভাবেই বাছাই করতে না পারলে এবং বিনিয়োগ কৃত অর্থ ঠিক মতো উঠে না আসলে নতুন সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আমাদের মনে রাখতে হবে,এটি সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য রাজস্ব খাত থেকে পাওয়া অর্থ না। এর ব্যবস্থাপনা ও আলাদা হতে হবে। আবার দেখতে হবে করোনাউত্তর সময় আমদানির চাহিদা কেমন হয়। ব্যাংকিং মডেল কাজ করলে ও এর মান হতে হবে বৈশ্বিক অর্থাৎ টাকা কেমন প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হচ্ছে এবং সেই টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার বা কাজে লাগানো হচ্ছে কি না। পাশাপাশি সঠিক বিনিয়োগে অর্থ উঠে আনা যাবে কি না। এগুলো মূল্যায়ন করতে হবে শক্তভাবে। না হলে দায় দেনা বাড়বে ও অপব্যবহারের ঝুঁকি ও তৈরি হবে।
অপরদিকে প্রজেক্ট পারপেক্ট না হলে আর্থিক লাভ নিশ্চিত না হলে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আশংকা থাকবে এবং একই সাথে দীর্ঘসূত্রতার কারণে একটা চক্র তৈরি হবে যারা রিজার্ভ থেকে নেয়া অর্থকে বিপদে ফেলে দেবে।
তাই, অর্থনীতিবিদরা মনে করেন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য মূল ব্যাংকিং চ্যানেলের ওপরেই নির্ভরশীল থাকা উচিত। একই সাথে রিজার্ভের অর্থ ব্যবহার নিয়ে কোনো সমস্যা তৈরি হলে সেটি পরবর্তীতে আবার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ও যেমন সমস্যা তৈরি করবে তেমনি যারা বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণ করেন তাদের মধ্যে ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে।
লেখক- অর্থনীতি বিশ্লেষক, Email: pkroyrajat2016@gmail.com