স্টাফ রিপোর্টার : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হতদরিদ্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ দেয়া ঘর ভাঙাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এক সাংবাদিকের প্রতিবেদনের পর এ নিয়ে এলাকায় হৈচৈ দেখা দিয়েছে। তবে সংবাদটিকে পুরো মিথ্যা বলেছেন স্বয়ং ঘর মালিক তার বাবা ও স্ত্রীসহ সকলেই।
নির্মাণ সংশ্লিষ্টদের সাথে ঘরের বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তির কথার মিল পাওয়া গেলেও ওই প্রতিবেদনের সাথে বাস্তবতার কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
উপজেলায় এবার হতদরিদ্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য পাঁচটি সেমিপাকা বসতঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের বসন্তিয়া গ্রামের জুয়েল রবিদাসকে একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ওই ঘরটি আধা নির্মিত হওয়ার পর ঘরের একপাশের দেয়ালে ‘সামান্য পরিমাণ’ ফাটল দেখা দেয়ায় সেটি ভেঙে পাশেই পুনরায় ঘরটি নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জুয়েল রবিদাসের বাবা লালমোহন রবিদাস। এ নিয়ে তাদের কোন অভিযোগ নেই বলেও জানান তিনি।
তবে নির্মাণ কাজ শেষের আগেই ঘর ভেঙে মাটির সাথে মিশে গেছে বিষয়টিকে জটিল দেখিয়ে একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয় বিভন্নি মহলে। জুয়েল রবিদাস ও তার স্ত্রী দিপালী রবিদাসের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই সংবাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ‘আমাদের দেখানো জায়গায় ঘর নির্মাণ করা হয়নি। ঘরটি আপনা-আপনি ভেঙে গেছে।’
সংবাদে প্রকাশিত এসব তথ্যকে মিথ্যা উল্লেখ করে ঘর মালিক জুয়েল রবিদাস ও তার স্ত্রী দিপালী রবিদাস বলেন, ঘর তো ভাঙেনি, সামান্য ফাটল দেখা দিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত হয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘরটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করে দিচ্ছেন। ঘর কখন ভেঙে পড়ার কোন ঘটনাই ঘটেনি। দাহলে আমরা এসব বলবো কি করে।
এলজিইডি’র উপজেলা মোহনগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন জানান, ওই ঘরের পাশেই একটা বড় গর্ত থাকায় এক পাশের দেয়ালে সামান্য ফাটল দেখা দিয়েছিল। সেকারণে আমরাই ঘরটি ভেঙে পাশেই আবার নতুন করে ঘর করে দিচ্ছি। আপনারা জেনে দেখুন কথাগুলো সত্যি কিনা। ওই সংবাদে প্রকাশিত তথ্য পুরোটাই বাস্তবতার উল্টো বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান বলেন, ঘরের একটি দেয়াল কাঁচা মাটিতে উঠেছিল বিধায় ওই দেয়ালে সামান্য ফাটল দেখা দেয়। পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসলে ওই সময়ই ইঞ্জিনিয়ারকে ডেকে ঘরটি ভেঙে পুনরায় করে দিতে বলি। এখন সামান্য ফাটল ছিল, বর্ষায় বৃষ্টিতে কাঁচা মাটিটা বসে গিয়ে ফাটল আরো বাড়তে পারে। গরীব মানুষ তখন তারা বিপদে পড়বে। সেকারণে তাৎক্ষণিক সেটি ভেঙে নতুন ঘর করে দিতে বলি। ওই সংবাদে প্রকাশিত তথ্য আর বাস্তবতা আপনারাই যাচাই করে দেখুন।
উল্লেখ্য, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনমানের আর্থসামাজিক উন্নয়নের মোহনগঞ্জ উপজেলায় পাঁচটি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘরের নির্মাণব্যয় ধরা হয় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পিআইসির (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) মাধ্যমে এসব ঘরের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।