প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ বিপর্যয় নামিয়ে এনেছে ভারতে। এই ভাইরাসের তাণ্ডবে যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার এই দেশটি। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৬৪৫ জনের। আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ২৫৭ জন।
ভারতে করোনা সংক্রমণ এতটাই ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে যে, দেশটির প্রতিটি জেলায়, গ্রামে-গঞ্জে ঢুকে পড়েছে এই ভাইরাস।
ভয়াবহ সংক্রমণের মধ্যেও মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলার চিখালার গ্রামকে স্পর্শ করেনি করোনা। ইতোমধ্যেই সংক্রমণ মোকাবিলার ব্যবস্থায় নজির তৈরি করেছে এই গ্রাম।
কীভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলল চিখালার?
২০০৯ সালের হিসাব অনুযায়ী, গ্রামটিতে ৮৭টি পরিবারের বাস, জনসংখ্যা সব মিলিয়ে ৪৭৬। গ্রামে ২৪০ জন নারী ও ২৩৬ জন পুরুষ।
তবে গ্রামটির নারীদের তৎপরতার কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কোনও বহিরাগতকে এই গ্রামে ঢুকতে দেন না তারা। নিজেরাও সচরাচর গ্রাম ছেড়ে বের হন না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য গ্রামের দু’জন যুবককে নিয়োগ করেছেন তারা। ওই দু’জনই প্রয়োজন জেনে গ্রামের বাইরে গিয়ে সেসব নিয়ে আসেন ও বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন।
গ্রামটিতে প্রবেশের মূল রাস্তা বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর সেখানে দিনের ২৪ ঘণ্টা পালা করে লাঠিহাতে পাহারা দেন গ্রামের নারীরা। বিনা প্রয়োজনে কাউকে রাস্তায় ঘুরতে দেখলে পেটাতেও পিছপা হন না তারা।
চিখালার গ্রামটি এতদিন দেশি মদের জন্য কুখ্যাত ছিল। বেআইনি দেশি মদ তৈরি করেই মূলত জীবিকা নির্বাহ করত গ্রামবাসী। কিন্তু করোনা ঠেকাতে ওই গ্রামের নারীদের এই উদ্যোগ ভারতের জন্য উদাহরণ তৈরি করেছে। সূত্র: আনন্দবাজার