খ.ম. নাজাকাত হোসেন সবুজ (বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি) :
বাগেরহাট জেলাধীন মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের দিগরাজ বাজার এলাকায় দুই ইউপি চেয়ারম্যান সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। আহতদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ৫ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের আবুল বাশার শেখের (৬৫) কাছ থেকে হাটের ইজারার কথা বলে জোর করে মইন উদ্দিন ও ফরিদ শেখ নামে দু’ব্যক্তি প্রতি বছর মোটা অংকের টাকা আদায় করে আসছিল। কিন্তু হাটের ইজারার কোন বৈধতা এদের ছিল না। এবার হাটের ইজারার টাকা দাবি করলেও আবুল বাশার শেখ তা না দিলে ঘটনার সময় উভয়ের মধ্যে এ নিয়ে সংঘাত ও সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বর্তমান চেয়ারম্যান কবির শেখের লোকদের হাতে ভবিষ্যত চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদারের ১৩ জন লোক কমবেশী আহত হয়েছে।
আহতরা হচ্ছে, মান্নাফ শেখ (৫৫), আলামিন শেখ (৩৮), মান্নান শিকারী (৫২), আল মামুন শেখ (৩৫), আবু সাইদ শেখ (৪৫), মহিদুল মোল্লা (২৫), আজমল শেখ (৪৮), আবু জাফর শেখ (৫০) রুস্তুম গাজী ((৫৭), মিজান সরদার (৩৩), আবুল বাসার শেখ (৬৫), আলী আজম মোল্লা (৫৪) ও মনির মোল্লা (২৬) আহত হয়েছে। তাদের সকলের বাড়ী সুন্দরবন ইউনিয়নের দ্বিগরাজ বাজার এলাকার বিভিন্ন স্থানে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এদের মধ্যে আঃ মান্নান শিকারী, আলামিন শেখ, নবাব শেখ, মন্নাফ শেখ ও আবু জাফর শেখকে রক্তাক্ত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সৃন্দরবন ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের মনোনিত নৌকা প্রতিকের বিনা (প্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত) চেয়ারম্যান মোঃ ইকরাম ইজারাদার বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ কবির উদ্দিন নৌকা প্রতিক না পাওয়ায় পুর্ব থেকেই আমাদের লোকজন ও সমর্থকদের উপর কারনে-অকারনে সমস্যা সৃষ্টি করে আসছিল। শুক্রবার রাতে তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের লোকজনের উপর পুর্ব পরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমাদের কমবেশী ১৩ জন আহত হয়েছে। ৫জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানায় তিনি।
বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ কবির উদ্দিন তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন সুন্দরবন ইউনিয়ন সুষ্ঠ ও শান্তি অবস্থা বিরাজ করছিল। কিন্ত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর লোকজন এলাকার মানুষদের অহেতুক ভাবে হয়রানীসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে। আমাকে এলাকায় হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা নিজেরা নিজেদের লোকজনের সাথে সংঘাত সৃষ্টি করে আমার লোকজনের উপর দোষারোপ করছে বলে জানায় চেয়ারম্যান শেখ কবির উদ্দিন।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, সুন্দরবন ইউনিয়নের মারামারীর ব্যাপারে এখনও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় থানার এ কর্মকর্তা।