তাসলিমুল হাসান সিয়াম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গত রবিবার গাইবান্ধায় বয়ে যাওয়া বৃষ্টি হীন বিধ্বংসী ঝড়ের সময় গরম বাতাস বা হিট শকে ধানগাছ সহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৪ মার্চ বিকেলে শুরু হওয়া এ ঝড় চলে কয়েক ঘণ্টা। এতে স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দেয় আতঙ্ক। সন্ধ্যায় বাতাসের তাপমাত্রা স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি ফেরে। তবে সোমবার সকালে উঠেই দেখা যায় সর্বনাশের চিহ্ন। সূর্যের প্রখরতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মরতে থাকে মাঠের পর মাঠ উঠতি বোরো ধানের শীষ।
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের সাকোয়া ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় বাদশা মিয়ার মালিকানাধীন ২টি ইটভাটা থেকে অসহনীয় গরম তাপমাত্রা নির্গত হওয়ায় ওই এলাকা জুড়ে প্রায় ২’শ বিঘা জমির বোরো ধান ঝলসে যায়। ক্ষতিগ্রস্থ ধান চাষীদের অভিযোগ ঝড়ের সময় দু’টি ইটভাটার নির্গত গরম বাতাসের ঝাপটায় ওই এলাকার বিপুল পরিমাণ জমির ধানগাছ ঝলসে গেছে বলে কৃষকরা তাদের অভিযোগে জানায়। তবে এই সমস্যা শুধু পলাশবাড়ী উপজেলায় হয়নি গাইবান্ধা সদরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় হয়েছে । গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের আরিফ খা বাসুদেব পুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শাহিন মন্ডল জানান , আমার নিজের কোন জমি নাই তাই অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ধানের আবাদ করেছিলাম । শুরুতে ধানের ফলন ভালো হওয়ায় মনে আশার সঞ্চার হয়েছিল কিন্তু গত পরশুদিনের ঝড়ে আমার সব কিছু শেষ হয়েছে এখন ধান গাছে আর ধান নেই সব পুড়ে গেছে ।
কৃষি কর্মকর্তা তানজিমুল হাসান জানান,মার্চ মাসের ৩য় সপ্তাহ থেকে দিনের বেলার তাপমাত্রা প্রায়শই ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়েও বেড়ে যাচ্ছে যা ধানের ফুল ফোটা পর্যায়ে চিটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও সারা দেশে বা বিছিন্নভাবে এসময় কাল-বৈশাখী ঝড় বিশেষ করে বৃষ্টি ছাড়া শুধু গরম বায়ু প্রবাহ দিনে-রাতে প্রায়শই হচ্ছে যার ফলে কালো দানা বিশিষ্ট শীষ বা অনেক ক্ষেত্রে সাদা শীষ বিশিষ্ট চিটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এ সময় বোরো ধানের যে সকল জাত ফুল ফোটা পর্যায়ে আছে বা এখন ফুল ফুটছে বা সামনে ফুল ফুটবে সে সকল জমিতে পানি ধরে রাখলে ধানের ফুল ফোটা পর্যায়ে হিট শক/ হিট ইনজুরি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় এবছর গাইবান্ধা জেলার সাত উপজেলায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ।