লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ সংখ্যালঘুদের নিয়ে নানা ধরণের কুটক্তি করায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় আওয়ামীলীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। তবে মানববন্ধন শেষ হওয়ার আগেই পুলিশ এসে তা পন্ড করে দেয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় বাসিন্দা বোজেন্দ্র নাথ, শিশির চন্দ্র রায়, রঞ্জিত রায়, রতন ঠাকুর প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল সিন্দুর্না ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বলেন, আমরা নাকি গরু খাওয়া হিন্দু। আমরা যদি নৌকায় ভোট না দেই তাহলে আমাদের মন্দির ভেঙ্গে দেয়া হবে। আমাদেরকে পূজা আর্চনা করতে দেয়া হবে না। আর আমাদেরকে মারধর করে হাত-পা ভেঙ্গে দেশ থেকে বিতারিত করা হবে। ভোট শেষ হয়ে গেছে কিন্ত এখনো আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। শ্যামলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। অতি দ্রত শ্যামলকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির ব্যবস্থা করা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবো।
এ বিষয়ে গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিককে ফোন ০১৭১৭০৬১৪২২ করা হলে তিনি ফোনটি কেটে দেয়।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ওসি (তদন্ত) মূসা বলেন, পুলিশ মানববন্ধনে কোন বাধা দেয়নি। রাস্তায় যেন কোন ধরনের সমস্যা না হয় সে জন্য বলা হয়েছে। আর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি নতুন আসছি। এ বিষয়ে জানিনা।
প্রসঙ্গগত; গত ২৯ ডিসেম্বর সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে নৌকায় ভোট না দিলে হাত-পা ভেঙ্গে দেশ থেকে বিতারিত করা হবে বলে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদেরকে হুমকি দেয় আ’লীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল। এ ঘটনায় গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে শ্যামলকে প্রধান আসামী করে ২২জনের নামে হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ব্রজেন্দ্রনাথ।
এ ঘটনায় আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামীলীগের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে হিন্দুরা বাংলাদেশে আছেন। আওয়ামীলীগ সবসময় সংখ্যালঘুদের জন্য লড়াই করে। আমাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সংখ্যালঘুরা আছেন। আওয়ামীলীগ নেতার ওই ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন।