স্টাফ রিপোর্টার : নেত্রকোনা দুর্গাপুর উপজেলায় মহারাজা কুমুদ চন্দ্র পাইলট (এম.কে.সি.এম) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারনের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচীর ঘোষনা করে শিক্ষার্থীরা। পরে মঙ্গলবার (২৮ জুন) সকাল ১০টার দিকে দুর্গাপুর পৌরশহরে প্রেসক্লাব মোড়ে ছাত্র, অভিভাবক ও সুশীল সমাজের ব্যানারে অবস্থান নেয় ছাত্ররা। পাঁচ মিনিটের মধ্যে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা এসে শিক্ষার্থীদের জানায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তিনি পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন। এতে ছাত্ররা আন্দোলন সমাপ্তির ঘোষনা করেন।
মহারাজা কুমুদ চন্দ্র পাইলট (এম.কে.সি.এম) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টি দুর্গাপুর পৌরশহরে এম.কে.সি.এম মোড়ে অবিস্থিত। বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারি শিক্ষক এসএম আলমগীর হাসান দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী আলিফসহ আন্দোলনকারী ছাত্রদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে হয়রানি করেন। খেলার জন্য টাকা নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করেন নাই। এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের জন্য ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা নিয়েও বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেননি। এসবের অর্থ তুলে তিনি (ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) ব্যক্তিগত তহবিলে নিয়ে যান। গত পাঁচ-ছয় মাস পূর্বে এবার যারা এসএসসি পরীক্ষা দিবে তাদের ক্লাশ নেওয়া বন্ধ করে দেন। এ বিষয়ে ছাত্ররা যাতে আন্দোলন করতে না পরে তাদেরকে প্র্যাকটিকেল ও এসাইনমেন্টে মার্ক কম দিবে বলে ভয়ভীতি দেখান। পরে এসএসসি পরীক্ষার্থী তাদের কাছ থেকে স্বেচ্ছায় ক্লাশ করতে চায় না- এ মর্মে মুছলেকা নেন।
নাম না প্রকাশে এক ছাত্রের অভিভাবক জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শারিরীক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। কখন কি বলেন তা তিনি কিছুক্ষণ পরে মনেই করতে পারেন না। গত একবছর আগে ঝড়ে বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি গাছ পড়ে যায়। সেগুলো তিনি ব্যক্তি উদ্যোগে বিক্রির পাঁয়তারা করেন। পরে সাংবাদিকসহ স্থানীয় গণ্যমান্যবর্গের তোপের মুখে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গাছগুলো বিক্রির জন্য ইউএনওকে অবগত করার কথা। এক বছরের মধ্যে ইউএনওকে গাছের বিষয়ে চিঠি দিয়ে এখানো অবগতই করেন নি। গাছগুলো পঁচেই নষ্ট হয়েছে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এসএম আলমগীর হাসান জানান, আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব ছেড়ে দিব। এ বিদ্যালয়ে থেকে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাব এর বেশি আর কিছু বলতে চাননি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফুর জানান, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে বিষয়টি জেনেছি। শুনেছি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে চান না। আগেই বদলির জন্য আবেদন করেছেন। বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব ময়মনসিংহ অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ও মাউশির। তবে তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন জানান তিনি।