লোকমান হাফিজঃ
মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জের ধরে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার শামারচর (খাসিয়াহাটি) গ্রামের দীগেন্দ্র দাসের স্ত্রী পূর্বতী রানী দাস (৩২) রাহুলকে (৩) হত্যা করে একটি স্যুটকেসের মধ্যে ভরে খাটের নিচে রেখে দেন।
লাশটি পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হলে সোমবার (১৮ এপ্রিল) ভোররাতে লাশটি বাঁশঝাড়ের মধ্যে ফেলে দেন ঘাতক নারী। তার হাতে প্রাণ যাওয়া শিশু রাহুল দাস (৩) হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর গ্রামের রুবেল দাসের ছেলে।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে সিলেট মহানগরীর মদীনা মার্কেট এলাকার কালিবাড়ি সবুজবাগ আবাসিক এলাকার এ-ব্লকে বাবুল দেবের কলোনির পাশের বাঁশঝাড় থেকে রাহুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
জালালাবাদ থানাপুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত স্যুটকেসসহ বেশ কয়েকটি আলামত উন্মোচন করে। এ ঘটনায় রাহুলের বাবা বাদি হয়ে সিলেটের জালালাবাদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় শিশু রাহুলের ঘাতক পূর্বতী রানী দাসকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) আদালতে প্রেরণ করা হয়।
জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাজমুল হুদা খান বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর বিষয়টি তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পারে- কালিবাড়ি এলাকার বাবুল দেবের কলোনিতেই আলাদা দুটি কক্ষে পরিবার নিযে ভাড়া থাকেন পূর্বতী দাস ও রাহুলের মা রুমা দাস। দুদিন আগে শিশু রাহুল দাসের মা রুমা দাসের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সাথে ঝগড়া হয় প্রতিবেশী পূর্বতী দাসের। এই ঝগড়ার জেদ থেকে রুমা দাসের শিশু সন্তানকে বাসায় ডেকে নিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন পূর্বতী দাস।
তিনি আরও জানান, শিশুটিকে গত শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১টায় শ্বাস রোধে হত্যা করে একটি স্যুটকেসের মধ্যে ভরে খাটের নিচে রেখে দেন পূর্বতী দাস। তবে লাশটি পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হলে সোমবার ভোররাতে লাশটি কলোনির পার্শবর্তী বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে ফেলে দেন তিনি।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে এক প্রতিবেশী বাঁশঝাড়ের পাশে প্রস্রাব করতে গেলে বাসার প্রায় বিশ গজ দূরে একটি বাঁশঝাড়ে বাচ্চাটির লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে জালালাবাদ থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে প্রেরণ করে।
ওসি বলেন, উদ্ধার করা আলামত ও পুলিশের হাতে থাকা তথ্য প্রমাণে আমরা নিশ্চিত পূর্বতীই এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন।
নিহত শিশুর পিতা রাজমিস্ত্রি রুবেল দাস জানান, গত শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর থেকে রাহুল দাসকে খোঁজে পাননি তারা। এরপর থেকে আশপাশ এলাকায় অনেক খোঁজাখুজি করেও বাচ্চাটিকে পাওয়া যায়নি। ওইদিনই এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করি। নিখোঁজের দুদিন পর সোমবার বাচ্চাটার লাশ পান।