জহরুল ইসলাম, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ-
বছর ঘুরে দীর্ঘ এক মাস রমজানের সিয়াম সাধনার পর আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। নতুন পোষাক, বিভিন্ন ধরনের খাবারসহ হরেক রকম আয়োজনে পালিত হয় মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ এই উৎসব। ঈদ মানে— ভেদাভেদ ভুলে, দুঃখকে বিদায় জানিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠার দিন।
এই দিনটি উপলক্ষে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটাতে এবং ঈদের আনন্দকে বর্ণময় করে তুলতে ‘থেকে একসাথে যুক্ত, করবো পৃথিবী পথশিশু মুক্ত’ শ্লোগানকে সামনে রেখে এগিয়ে এসেছে Come For Road Child (সিআরসি)-এর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যরা।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হল মণি স্মৃতি মিলনায়তন কেন্দ্রে সদর উপজেলার পাচুড়িয়া শিশুবাগান এলাকার দেড় থেকে চৌদ্দ বছর বয়সী প্রায় ৬৫ জন পথশিশুর মাঝে ইদের পোশাক বিতরণ করেন তারা।
নতুন পোষাক পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুরা। নতুন কাপড়ের প্যাকেট হাতে পেতেই গায়ে দিতে শুরু করে তারা; যেন দিনেই দেখা মিলেছে একফালি নতুন চাঁদের।
নতুন পোষাক পেয়ে কুরবান নামে এক শিশু বলে, ‘ইদের জামা কাপড় পেয়ে আমার অনেক খুশি লাগছে।’
নতুন পোষাক পেয়ে সিআরসিকে সন্তানের হাসি মুখের কারণ বলে উল্লেখ করে কুরবান এর মা বলেন, ‘মামারা (সিআরসি সদস্য) বিপদে-আপদে সব সময় আমাদের পাশে থাকে। প্রতি ঈদে মামারা আমাদের পোলাপাইনের ( বাচ্চাদের) পাশে সবসময় থাকেই। আমাদের যা দরকার মামারা আমাদেরকে দেয়। আমাদের ছেলে-মেয়েদের খোঁজ খবর নেয় সব সময়। আমরা আজকে কাপড় পেয়ে খুব খুশি হইছি।’
পথশিশুদের মাঝে নতুন পোষাক বিতরণের বিষয়ে জানতে চাইলে সিআরসির সভাপতি রাফিউজ্জামান ওয়াসিক ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘শিশুরা নতুন পোশাকে আনন্দের সাথে ঈদ করতে চায়, তাই প্রতিবারের মতো এবারেও আমরা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ঈদ বস্ত্র উপহার দিয়েছি, যাতে করে নতুন পোশাকের অভাবটা তাদের কষ্ট না দেয়।’
উপদেষ্টা শিকদার মাহাবুব ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘সিআরসিতে আমরা সকলেই শিক্ষার্থী, পড়াশোনার পাশাপাশি আমাদের মনের যে খোরাক বা মনের যে চাহিদা, ভালোলাগা, ভালোবাসা বা কিছু মানুষের পাশে থাকা— সে জায়গা থেকেই আমাদের মূলত সুবিধাবঞ্চিত বা ছিন্নমূল মানুষের পাশে থাকা।’
সিআরসি একটি অলাভজনক, অরাজনৈতিক, অসাম্প্রদায়িক ও একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন। মূলত সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করলেও বৃদ্ধ ও অসহায় মানুষের পাশেও দাঁড়ায় সংগঠনটি।