জসিম উদ্দীন, কলমাকান্দা, নেত্রকোণা:
নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলায় অর্থের অভাবে প্রায় এক যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় । বিদ্যালয়টিতে আছে দুইটি অর্ধ পাকা ঘর, পর্যাপ্ত চেয়ার-টেবিল ও ব্রেঞ্চ। শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য রয়েছে বিশাল মাঠ। নেই শুধু শিক্ষক।
বুধবার বিকালে লেংগুরা ইউনিয়নের মানিকপুর এলাকায় এই প্রতিষ্ঠানটির খোঁজ মিলে। প্রতিষ্ঠানটির নাম মানিকপুর জিবিসি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৫ সালে জাপান সরকারের অর্থায়নে মানিকপুর এলাকায় জিবিসি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। এরপর বিদ্যালয়টিতে চার জন শিক্ষক নিয়োগ দেয় জিবিসি। ওই সময়ে বিদ্যালয়টিতে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান কার্যক্রম চলছিল। আর বিদ্যালয়টির দেখবালসহ আর্থিক সহযোগিতার দায়িত্বে ছিল জিবিসি নামে খ্রীষ্টানদের একটি সংগঠন ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। ২০১৩ সালে ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ এর শিক্ষাপ্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বিদ্যালয়টিতে আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকেই মানিকপুর জিবিসি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ অকেজো হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষুদিরাম হাজং বলেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ ও জিবিসি যৌথভাবে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চালাতো। বিদ্যালয়টি চালু থাকাকালীন ৫/৭টি গ্রামের অন্তত দেড় শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করত। আর নয় বছর ধরে বিদ্যালয়টি বন্ধ থাকায় আড়াই কিলোমিটার দূরে গিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা করতে হচ্ছে।
আদিবাসী নেতা বদুয়েল চিসিম বলেন, কলমাকান্দা উপজেলায় এরকম আরো বেশ কিছু বিদ্যালয় রয়েছে সেগুলোও বর্তমানে বন্ধ আছে। এনিয়ে আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। তিনি স্কুলগুলো চালু করতে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করবেন বলে আশ^স্ত করেছেন।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি রমেশ চেব্রা বলেন, ওয়ার্ল্ডভিশনের সহযোগিতায় জিবিসির পরিচালনায় সেসময় ওই বিদ্যালয়টি ভালো ভাবেই চলছিল। শিক্ষার্থীও ছিল প্রায় দেড় শতাধিক। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টিতে ওয়ার্ল্ডভিশন সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকেই আর্থিক সংকটের কারণে বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পরে। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি আবারো চালু হোক।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, বিদ্যালয় স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে বিদ্যালয় বিহীন গ্রামে নতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করার সুযোগ আছে।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম বলেন, এই সংক্রান্ত কোন তথ্য জানা নেই। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করে এই বিদ্যালয়টি চালু করা যায় কিনা তা চেষ্ঠা করে দেখবেন।