নিত্যপণ্যের লাগামহীন দাম এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দামবৃদ্ধির পদক্ষেপ বন্ধে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা হরতালে সাড়া নেই।
হরতালের সমর্থনে পল্টন ও শাহবাগে জোটের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিলেও ঢাকার অন্যান্য সড়কগুলোর চিত্র চিরচেনা। যানজটে স্থবির হয়ে আছে সড়কগুলো। স্বাভাবিক দিনের মতোই চলছে সবকিছু।
সোমবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে তীব্র যানজটের চিত্র চোখে পড়েছে।
কল্যাণপুর থেকে আসাদগেট পর্যন্ত পুরো মিরপুর সড়কে দেখা গেছে তীব্র যানজট। সড়কে বের হওয়া নাগরিকদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে তেজগাঁও ও বিজয়সরণী সিগন্যালে।
একই অবস্থা ফার্মগেট থেকে বাংলামোটর সড়কেও। তবে শাহবাগে হরতাল সমর্থকদের অবস্থানের কারণে বিকল্প পথে যানগুলো চলাচল করছে। যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে রোকেয়া সরণীতেও। কুড়িল থেকে চট্টগ্রাম বিশ্বরোড সড়কেও যানজটের রুপ চিরচেনা।
মোটরসাইকেল যোগে আদাবর থেকে গুলিস্থানের উদ্দেশ্যে বের হওয়া সজিব সরকার ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘মিরপুর রোডে উঠেই জ্যাম পেয়েছি। পুরো রাস্তা জ্যাম। নড়ার ব্যবস্থা নাই। গুলিস্থান আসতে দেড় ঘণ্টা লেগে গেছে।’
মহাখালি থেকে বিমানবন্দর সড়ক ধরে টঙ্গীর পথে যেতে চাওয়া যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে যানজটে।
এসি সার্ভিসের কর্মী রুহুল আমিন ঢাকা মেইলকে জানান, সকাল ৮ টায় মোহাম্মদপুর থেকে অটোরিকশা যোগে বের হয়ে ১০ নাগাদ উত্তরা পৌঁছেছেন তিনি।
রুহুল বলেন, ‘এক ঘণ্টার রাস্তা না। কিন্তু অটোরিকশায় দুই ঘণ্টা লাগছে। গাড়ি নড়েই না। এত জ্যাম।’
সড়কে চলমান গাড়ির স্থবিরতা তৈরি হয়েছে মৌচাক, মালিবাগ, খিলগাঁও, রামপুরা, বাড্ডা হয়ে কুড়িল কাজী বাড়ি পর্যন্ত।
অফিসের উদ্দেশ্যে রামপুরা থেকে বের হয়ে নতুন বাজার যেতে দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রফিকুল ইসলামকে।
ঢাকা মেইলকে রফিকুল বলেন, ‘বাম জোটের হরতালের খবরটি রাতে জেনেছি। জানি হরতাল তেমন হবে না। অনেকদিন পর হরতাল ডাকায় যানজট কিছুটা কম হবে ভেবে একটু দেরিতেই বেরিয়েছিলাম। কিন্তু সড়কের অবস্থা দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আগের চেয়েও আজ যানজট বেশি মনে হয়েছে। আগে জ্যাম থাকার পরেও নতুনবাজারে যেতে যেখানে ঘণ্টাখানেকের মতো সময় লাগতো আজ দেড় ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে।’
যানজটের মাত্রা তীব্র হয়েছে মৎস্য ভবন হয়ে প্রেসক্লাব, গুলিস্তানেও।
এদিকে বাম জোটের ডাকা হরতালে স্বাভাবিক রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান চলছে। স্বাভাবিক দিনের মতোই চলছে দোকানপাট। প্রভাব নেই জনজীবনে।
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আজ পালন করা হরতালটি ডাকা হয়েছিল গত ১১ মার্চ। ঘোষণা অনুযায়ী, সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হরতাল চলার কথা।