প্রথমবারের মত নারী বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে নিজেদের প্রথম অংশগ্রহণ ততটা রাঙাতে পারেনি নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। আগেই বিদায় নিশ্চিত হওয়া টাইগ্রেসরা নিজেদের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছে ১০০ রানের বড় ব্যবধানে।
এর আগে ওয়েলিংটনে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন হেদার। ইনিংসের ৫ম ওভারে ড্যানি ওয়ায়েটকে আউট করে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন জাহানারা আলম। এর এক ওভার বাদেই অধিনায়ক নাইটকে তুলে নিয়ে টাইগার ভক্তদের আবারও আনন্দে ভাসান গত ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করা সালমা।
এরপর দারুণ এক জুটি গড়েন ট্যামি বোমন্ট ও ন্যাট স্কাইভার। তবে দলীয় ২৪তম ওভারে ৬৯ বলে ৩৩ রান করে বোমন্ট বিদায় নিলে ভাঙ্গে এই জুটি। বাংলাদেশকে এই সাফল্য এনে দেন রিতু মণি। ততক্ষণে অবশ্য ১০১ বল থেকে ৬০ রান যোগ করে ফেলেছেন দু’জন।
এর পরের ওভারে স্কাইভারকেও ফেরত পাঠান লেগি ফাহিমা খাতুন। ৯৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। সেখান থেকে প্রত্যাবর্তনের দারুণ এক গল্প লেখেন এমি জোনস ও সোফিয়া ডাঙ্কলি। ৫ম উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৯৭ বল থেকে ৭২ রান। ৪৩ তম ওভারে ৩১ রান করে জোনস লতা মন্ডলের শিকারে পরিণত হলে ভাঙ্গে দারুণ এই জুটি।
সঙ্গীর বিদায়ে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন ডাঙ্কলি। হাতে পর্যাপ্ত উইকেট থাকায় ডেথ ওভারে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন নতুন ব্যাটার ক্যাথেরিন ব্রান্টও। ৪৩তম ওভারের শেষ বলে নাহিদার বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন ডাঙ্কলি।
৪৮তম ওভারে সালমার বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হওয়ার আগে খেলেন ৭২ বলে ৬৭ রানের ইনিংস। ডাঙ্কলি চলে গেলেও ঝড়ো ব্যাটিং অব্যাহত রাখেন ব্রান্ট। সোফি একেলস্টোনের সঙ্গেও ২৩ রান যোগ করেন মাত্র ১৬ বলে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রানে থামে ইংল্যান্ডের ইনিংস।
৫০ ওভারে করতে হবে ২৩৫ রান। ব্যাটিং সামর্থ্য বিবেচনায় এই লক্ষ্য নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের জন্য আর যাই হোক সহজ নয় মোটেও। সেই রান তাড়া করতে নেমে রীতিমত টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং শুরু করলেন দুই ওপেনার শামিমা সুলতানা ও শারমিন আক্তার।
দলীয় ৫০ ছুঁতে বাংলাদেশের লেগেছে ২০ ওভার ৩ বল। এর আগে ১৮তম ওভারে সোফি একেলস্টোনের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান শারমিন। ১ ওভার বাদে আরেক ওপেনার শামিমাকেও কেইট ক্রসের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন এই বাঁহাতি স্পিনার। ৪৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর ফারজানা-নিগার জুটি গড়ে দলকে কিছুটা স্বস্তি দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন বটে কিন্তু দলীয় ৬৯ রানে পিংকির বিদায়ে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে যায় বাংলাদেশ। ৩২ বল থেকে ১১ রান করে ফেরত যান বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে প্রথম ফিফটি এনে দেওয়া এই ব্যাটার।
পিংকির বিদায়ে ক্রিজে আসেন রুমানা আহমেদ। তিনিও যোগ্য সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হন অধিনায়ককে। দীর্ঘদেহী ফ্রেয়া ডেভিসের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান এই অলরাউন্ডার। আউট হওয়ার আগে করেন ১৬ বল থেকে ৬ রান। রুমানা ফিরে গেলে ব্যাট হাতে নামেন লতা মন্ডল।
ব্যাটারদের এমন অপরিকল্পিত ব্যাটিংয়ে প্রয়োজনীয় রানরেট বেড়ে দাঁড়ায় ৭.৬২। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সংগ্রহ রান ৪ উইকেট হারিয়ে ৮১ রান। ১৭ বল থেকে ১৬ রান করে অপরাজিত আছেন অধিনায়ক জ্যোতি।