বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দুই দিনব্যাপী সম্মেলন মঙ্গলবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে শুরু হয়েছে। এটি শেষ হচ্ছে আজ।
এই বছর ‘একতা, ন্যায়বিচার ও উন্নতির জন্য সহযোগিতা গড়া’ প্রতিপাদ্যে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুই দিনের এই সম্মেলনে এক শর বেশি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
সম্মেলনের শুরুতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি সম্মেলনে আসা ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘ওআইসি বিশ্বের দুই শ’ কোটি মুসলমানের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর। এটি মুসলিম জাতিসমূহের মধ্যে এবং মুসলিম বিশ্বের সাথে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে সংযোগ সেতু।’
সম্মেলনে ৫৭ সদস্যের সংগঠনটির ৪৬টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অংশ গ্রহণ করছেন। অপর দেশগুলোর প্রতিনিধি দল ওই দেশগুলোর পররাষ্ট্র বিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
মুসলিম বিশ্বের চ্যালেঞ্জ এবং উদীয়মান সুযোগ নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের বাইরে সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন পাকিস্তানে সফররত চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অংশ নেননি। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশ নিয়েছে।
সম্মেলনে আফগানিস্তান, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও সিরিয়ার পরিস্থিতির উন্নতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি আফ্রিকা ও ইউরোপের মুসলমানদের সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী নিয়েও কথা বলেছেন ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, টুইন টাওয়ারে হামলার পর থেকে বিশ্বে ইসলামোফোবিয়া বেড়েছে। আফসোস, মুসলিম দেশগুলো পরিস্থিতি উন্নতির কোনো চেষ্টা করেনি। সারা বিশ্বের সামনে মুসলমানদের একটি ভুল ভাবমূর্তি তৈরি করা হয়েছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ইমরান খান বলেন, আমি একজন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় হিসেবে সারা বিশ্ব দেখেছি। আমি বুঝতে পারছি ৯/১১ ঘটনার পর মানুষের মধ্যে ইসলামফোবিয়া বেড়েছে। এ কথা বলতে আমার খারাপ লাগছে, কিন্তু আমরা মুসলিম দেশগুলো তা দূর করার কোনো অর্থবহ প্রচেষ্টা করিনি। কীভাবে একটি ধর্মকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত করা যায়? কীভাবে এই পৃথিবীতে দুই ধরনের মুসলমান থাকতে পারে? কীভাবে? একজন উদারপন্থী মুসলমান এবং একজন কট্টর মুসলমানকে কিভাবে আলাদা করা হচ্ছে?
এছাড়াও চীন এবং ইসলামিক দেশগুলোকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেইনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করার পরামর্শ দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
সম্মেলন শেষে পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি ও ওআইসি সেক্রেটারি হুসাইন ইবরাহিম তাহা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।