যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের বন্দিশিবির থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন অবৈধভাবে দেশটিতে যাওয়া পাঁচ বাংলাদেশি যুবক। ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী একটি শহরে সেনাবাহিনীর বন্দিশিবিরে আটক রয়েছেন ওই পাঁচ যুবক। তাদের মধ্যে রিয়াদুল মালিক নামে এক যুবক ভিডিওবার্তায় উদ্ধারের আকুতি জানান। এসময় পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন আরও চারজন। এমন একটি ভিডিও টুইটারে শেয়ার করেছেন ঢাকাস্থ রাশিয়ান দূতাবাস।
দুই মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ওই ভিডিও বার্তায় রিয়াদুল মালিক সিলেটি ভাষায় বলেন, আমার নাম রিয়াদুল মালিক। আমার পেছনে আরও বাংলাদেশি আছেন। দরজার ওপারে দাঁড়ানো আছেন আরেকজন। দরজার ওপারে দাড়ানোর কারণ হলো- এখানে সবার ফোন নিয়ে নিয়েছে।
এই ফোনটা আমরা লুকিয়ে রাখছি। আমরা যে ক্যাম্পে আছি সেখানে অনেক আর্মি আছে। এখানে রাশিয়া বোম ফেলতেছে শুধু আর্মি ক্যাম্প দেখে দেখে। আমরা অনেক ভয়ের মধ্যে আছি। আমরা অনেক আতঙ্কের মধ্যে আছি। আমাদের আটকে রেখেছে এখানে। একশ’র ওপরে এখানে মানুষ আছে জিম্মি অবস্থায়। রাত হলে বোমার শব্দ শুনতে পাই। গুলির শব্দ শুনতে পাই। লাইট বন্ধ করে দেয়।
তিনি আরও বলেন, একটা রুমে যেখানে আমরা ৩-৪ জন মানুষ থাকি সেখানে ১০ জন মানুষ রেখেছে। আমাদের মারধর করে। আমি একটি ভিডিও শেয়ার করেছি- আমাদের অনেক মারতেছে। ইউক্রেনে অন্য সব ক্যাম্প রাশিয়া বোম দিয়ে উড়িয়ে ফেলছে। এই ক্যাম্পটি শুধু আছে। আমরা জানি না আমাদের লাইফের নিশ্চয়তা কতটুকু আছে। আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি- আমাদের এখান থেকে উদ্ধার করার জন্য। আমাদের লাইফের এক মিনিটের নিশ্চয়তা নেই। আমাদের অপরাধ এইটুকু- আমরা ইলিগেলি বর্ডার ক্রস করেছি।
আমার এখানে ১৫ মাস হয়ে গেছে। অন্য ক্যাম্প থেকে মানুষ ছেড়ে দিছে। কিন্তু ওরা আমাদের ছাড়তেছে না। আমরা আমাদের ফ্যামিলির সঙ্গে কানেক্ট করতে পারছি না। বেলারুশ থেকে আমরা ৬০ কিলোমিটার দূরে আছি। যে কোন সময় যে কোনকিছু হতে পারে। আমাদের আকুল আবেদন- আমাদের এখান থেকে উদ্ধার করেন। আমাদের জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে। এখানে বিভিন্ন দেশে একশ’ জনের বেশি মানুষ আছে। এখানে নারী-শিশুও আছে। কিন্তু ওরা কাউকে ছাড়ছে না। আমাদের আকুল আবেদন- আমাদের এখান থেকে উদ্ধার করেন।