স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে প্রবীণ সাংবাদিক,উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রমেন্দ্র নারায়ণ বৈশাখের ওপর হামলার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ সাত রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এতে এক পক্ষে নারীসহ ১৩জন গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় দু-পক্ষের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা,পুলিশ,শিশু,নারীসহ আহত হয়েছে অন্তত ২০জন। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এঘটনার উপজেলার সচেতন মহলে চরম ক্ষোব বিরাজ করছে। তারা বলছেন বাজারটি সিসি ক্যামেরায় আওতা ভোক্ত সিসি ফুটেজ দেখে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাহিরপুর বাজারে সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক তানসেন তালুকদার তুশার ও যুবলীগ নেতা হাফিজ উদ্দিন ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আবুল বাসার লোকজনের মধ্যে এই সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে।
এর পূর্বে দুপুর ২টায় তাহিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাব ও নাগরিক সমাজের আয়োজনে সদর পশ্চিম বাজার এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ মানববন্ধনে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানসেন তালুকদার তুষার উপস্থিত ছিল।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও হামলায় আহত অঞ্জু মিয়া জানায়,দুপুরে মানববন্ধন শেষে বিকালে সাংবাদিক রাজনকে নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানসেন তালুকদার তুষার বাজারে আসে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাহিরপুর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক হাফিজ উদ্দিনের নির্দেশে তার নিজ গ্রাম উজান তাহিরপুর থেকে তার ভাতিজা সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আবুল বাশারের নেতৃত্বে আবু শামা,আবু হানিফ,জোসেফ মিয়াসহ ১৫/২০ জনের একটি গ্রুপ তানসেন তালুকদার তুষার এর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। খবর পেয়ে তানসেন তালুকদার তুষার এর পক্ষের লোকজন প্রতিহত করতে চাইলে অপরদিক থেকে ছিটা গুলি করা হয়। এ সময় ভাটি তাহিরপুর গ্রামের গৃহবধূ ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানসেন তালুকদার তুষারের আম্মা সুমি আক্তার (৪০)গুরুতর আহত হয়। এছাড়াও
আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ পাঁচজনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারা হলেন- ডালিয়া নারগিস সুমি (৫০), আনজু মিয়া (৩০), অনিক মিয়া (২৫), বাবলী চৌধুরী (৩৫) ও অংকন গনি (১২), নেজারুল ইসলাম (৩০), মাসুম মিয়া (২২), রুমেন মিয়া (৩০), রুনা বেগম (৪৫), তানসেন তালুকদার তুষার (৩০), রাসেল মিয়া (৩০), পারভীন আক্তার (৪৯) ও এমদাদুল মিয়াকে (৩৫) তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় দু পক্ষে লোকজনের ইট পাটকেলের আগাতে এসআই শাহাদাত(৩০),এএসআই শফিক(৩৫), কনস্টেবল জয়দেব দাস(২৯) ও আদিল মাহমুদ(২৯)আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসপি তাহিরপুর সার্কেল সাহিদুর রহমান।
সাংবাদিক রমেন্দ্র নারায়ণ বৈশাখের ছেলে রাজন চন্দ জানিয়েছেন, সংবাদ প্রকাশের জের ধরে গত ২০ ফেব্রুয়ারি তার বাবা রমেন্দ্র নারায়ণ বৈশাখের ওপর হাফিজ উদ্দিন ও তার ভাতিজা আবুল বাশারসহ কয়েকজন হামলা করে। তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে মানববন্ধনের আয়োজন হয়। মানববন্ধন শেষে হাফিজ উদ্দিনের সমর্থকরা আবারও এসে হামলা করে। এ সময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তানসেন তালুকদার আহত হলে তার সমর্থক ও স্বজনরা উত্তেজিত হয়। দুপক্ষে এ সময় সংঘর্ষ বাধে।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসা মির্জা রিয়াদ হাসান জানান,সংঘর্ষের ঘটনায় নারীসহ ১৯জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ১৩ জন। গুরুতর আহতদের সুনামগঞ্জে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন,ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানসেন তালুকদার তুশার ও যুবলীগ নেতা হাফিজ উদ্দিনের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।