সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
আমার স্বামীরে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে সন্ত্রাসী বাহিনী। আমার সন্তানদের এতিম করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে এর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী জানালেন নিহতের স্ত্রী খুশমালা বেগম ও তার স্বজনরা। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ওয়েজখালীস্থ শিয়ালমারা বিলের ইজারাদার মো. আব্দুল আজিজ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সকল খুনীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি প্রদানের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার দুপুর ১২টায় আব্দুল আজিজের স্বজনদের আয়োজনে শহরের শহীদ জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়নে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলেন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের বড় ছেলে ওয়েছ আহমদ।
তিনি বলেন, শিয়ালমারা চরদিঘা ডুবাটি আব্দুল আজিজ ওয়েজখালী-ইসলামপুর জগজবিনপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি হিসেবে ২০ বছর ধরে ডুবাটি দেখাশুনা ও ফিসিং করে আসছিলেন। কিন্তু গত দুইবছর যাবত এই ডুবাটি সরকার থেকে লীজ নিয়ে ফিসিং করে আসলেও একই এলাকার রমিজ মিয়া,আফতার উদ্দিন,আজিদ মিয়া ও আব্দুল কদ্দুছ গংরা এই ডুবাটি আপোসে তাদের দিয়ে দিতে আব্দুল আজিজকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। কিন্তু তিনি ডুবাটি দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রতিপক্ষ রজিম মিয়াগংরা প্রায় সময়ই আব্দুল আজিজকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। চলতি বছরের গত ৭ ফেব্রুয়ারী নামাংঙ্কিত রজিম মিয়া গংরা রাত ৮টায় শিয়ালমারা বিলের ইজারাদার আব্দুল আজিজকে শিয়ালমারা হাওরের চরদিঘা ডুবার পশ্চিম পাড়ে নিয়ে দাড়াঁলো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে বলে উল্লেখ করেন।
এ ঘটনায় নিহতের মেঝো ছেলে আবুল হাসনাত বাদি হয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারী রমিজ মিয়াকে প্রধান আসামী করে এবং ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে সুনামগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ইতিমধ্যে গোয়েন্দা পুলিশ তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করলে থানা পুলিশের সামনে আসামীরা প্রকাশ্য দিরালোকে ঘুরে বেড়ালে ও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি বলে তিনি অভিযোগ করেন। অবিলম্বে সকল খুনীদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শান্তি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ সুপারের নিকট দাবী জানান।
উল্লেখ্য, রমিজ মিয়া ও তার সহচররা ২০১৪ সালে ওয়েজখালী গ্রামের জামে মসজিদের ভেতরে ঈদের দিন একই গ্রামের ওয়ারিস আলীকে হত্যা করে। এই ওয়ারিশ আলী হত্যা মামলার জখমী স্বাক্ষী ছিলেন আব্দুল আজীজ। আর রমিজ মিয়া ইজারাদার আব্দুল আজিজকে ওয়ারিস হত্যা মামলায় তার পক্ষে স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য প্রস্তার দিয়ে আসছিল। আব্দুল আজিজ সায় না দেওয়ায় রমিজ গংরা বিভিন্ন সময় তাকে হুমকি প্রদর্শন করতো বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়। আরো বলেন ওয়েজখালী গ্রামে তারা আধিপত্য বিস্তারের জন্য দীর্ঘদিন যাবত মানুষদের নির্যাতন করে আসছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিচার দাবী করেন তার স্বজনরা। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিহতের বড় ছেলে ওয়েছ আহমদ, মেঝু ছেলে ও মামলার বাদি আব্দুল হাসনাত,মেয়ে নাজমা বেগম,ছোট ছেলে ইয়াহিয়া ও নিহতের ফুফাতো আলী হায়দার, নিহতের সহোদর ভাই আব্দুল হান্নান, আব্দুল গফ্ফার, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল হাফিজ, লিমন প্রমুখ।