স্টাফ রিপোর্টার : কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে উপবৃত্তি থেকে বঞ্ছিত অর্ধশত শিক্ষার্থীনেত্রকেনার মোহনগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী এবার উপবৃত্তি থেকে বঞ্ছিত হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতিইে দায়ী করছেন শিক্ষা কর্মকর্তাসহ শিক্ষার্থীরা। উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি দিতে হতো না। এখন উপবৃত্তি বঞ্ছিত হয়ে টিউশন ফিও দিতে হচ্ছে। ফলে এ বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে নবম শ্রেণিতে তিন শাখায় মোট ২৮৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ২২১ জন অটোপাশের মাধ্যমে অষ্টম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে উঠেছে। বাকিরা নতুন ভর্তি হয়েছে। ২২১ জন শিক্ষর্থীর মধ্যে ১০৮ জন শিক্ষার্থী শুরু থেকে উপবৃত্তি পেয়ে আসছে। এবারও ১০৮ জনের উপবৃত্তির ফরম পূরণ করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ৩-৪ জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তির ম্যাসেজ পেয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমা বর্মণ ও প্রীতি আক্তার জানায়, এর আগে উপবৃত্তি পেয়েছি। তবে এবার ফরম পূরণ করার পরও উপবৃত্তির টাকা এখনও পাইনি।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিম আক্তারের মা হেপি আক্তার জানান, উপবৃত্তির টাকা তো পায়নি উল্টো ফরম পূরণের জন্য কয়েক দফা কাগজপত্র দিতে হয়েছে। তারা নাকি সেটা হারিয়ে ফেলেছে। যারা উপবৃত্তি পেত তাদের বেতন দিতে হতো না। এখন বেতনের টাকা নেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ চাপ দিচ্ছে। অন্যান্য বিদ্যালয়ে ঠিকটাক মতো উপবৃত্তি পেলেও শুধু এখানকার শিক্ষার্থীরাই পায়নি। কর্তৃপক্ষের ভুলের খেসারত শিক্ষার্থীদের দিতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরশহরে অবস্থিত ‘মোহনগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ‘মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়’ ও ‘মোহনগঞ্জ পাবলিক হাই স্কুল’ এ তিনটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যথারীতি উপবৃত্তি পেয়েছে। উপবৃত্তি নিয়ে তেমন কোন জটিলতা হয়নি। ওই তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের সাথে কথা বলে এতথ্য জানা গেছে।
পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষক গীতা রানী বলেন, শিক্ষার্থীরা কেন উপবৃত্তি পাচ্ছে না এ বিষয়ের সঠিক কোন কারণ জানা নেই। তবে দায়িত্বে কোন গাফিলতি নেই, সঠিকভাবেই সবকিছু করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতাজ জাহান বলেন, উপবৃত্তি নিয়ে একটা হযবরল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সার্ভারের সমস্যার কারণে তথ্য এন্ট্রি দেওয়ায় কিছু ঝামেলা হলেও পরবর্তীতে এর সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা অফিসকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পেয়েছে বলে শুনেছি। হয়তো ধীরে ধীরে সবাই পাবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বজলুর রহমান আনসারী বলেন, যথা সময়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সার্ভারে তথ্য এন্ট্রি করেনি। পরে আমাকে যখন অবহিত করেছে, তখন তো আর সময় ছিল না। সময় শেষ করে জানালে তো আর কাজ হবে না।
মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবো।