কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন (স্টাফ রিপোর্টার) : স্বামীর মৃত্যুর পরে পুরতন প্রেমিকের সাথে বেড়াতে যাবার পথে মোটর সাইকেল থেকে পড়ে নিহত হন চার সন্তানের জননী জেসমিন আক্তার (৩০)। এ ঘটনায় প্রেমিক মুরসালিন ওরফে জোবাইদ ওরফে জোবাইর (৩২) এর নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ জোবাইদকে আদালতে প্রেরণ করেছে।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নিহতের বাবা কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় মানিকদি (পুরানগাঁও) গ্রামের মো. কাজল মিয়া বাদী হয়ে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় একমাত্র নাম উল্লেখ আসামি জোবাইদ একই উপজেলায় টান কৃষ্ণনগর গ্রামের আ. রাজ্জাকের ছেলে এবং তিনিও তিন সন্তানের জনক।
জানা যায়, জেসমিন আক্তারের বিয়ের পূর্বে বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব ও বিবাহের জন্য প্রস্তাব দেয় জোবাইদ। তার আচার-আচারণ খারাপ থাকায় জেসমিনকে অন্যত্র বিয়ে দেন নিহতের বাবা। গত দুবছর আগে চার সন্তান রেখে স্বামী মাহফুজ সড়ক দুর্ঘটনা মারা পর জেসমিন বাবার বাড়িতে থাকতেন। জোবাইদের স্ত্রী ও সন্তান থাকা সত্ত্বেও কৌশলে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে জেসমিনকে মন ভূলানোর কথা বলে। পূর্বের ক্ষোভের জেরে প্রতিশোধ নিতে পুনরায় বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে নিহতের বাবা বিয়েতে অস্মতি পোষন করেন। গত সোমবার মোবাইলে মন ভুলানোর কথা বলে জোবাইদ জেসমিনকে বাড়ি থেকে বের করে মোটর সাইকেলযোগে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানাধীন স্বল্প কমলপুর ব্রীজে নিয়ে আসে। অজ্ঞাত আরো ২-৩ জনের সহায়তায় মাথায় ও গলায় ওড়া প্যাঁচিয়ে হত্যা করে ব্রীজের উপরে ফেলে রাখে। খবর পেয়ে কেন্দুয়া থানায় এসে জেসমিনের মরদেহ দেখতে পান মামলা অভিযোগে উল্লেখ করেন নিহতের বাবা কাজল মিয়া।
এদিকে পুলিশে হাতে আটক প্রেমিক জোবাইদ জানান, জেসমিনের এক ফুফুর বাড়ি বাড়ির পাশে থাকায় কিশোর বয়সে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একসময় পারিবারিক সম্মতিতে জেসমিনের বিয়ে হয় মাহফুজের সাথে। মাহফুজ ও জোবাইদ মিয়া ভৈরব বাজারে একই মার্কেটে জুতার ব্যবসা করতেন। মাহফুজ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে তাদের প্রেমের সম্পর্ক আরো গভীর হয়। গত সোমবার প্রমোদ ভ্রমণের উদ্দেশে ভৈরব থেকে তারা দুজনে মোটরবাইকে করে সুনামগঞ্জের তাহেরপুর শিমুল বাগানের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে কেন্দুয়া-আঠারবাড়ি সড়কের কেন্দুয়া পৌরশহরের স্বল্প কমলপুর এলাকায় ব্রীজে ওঠার সময় মোটরবাইক থেকে সিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয় জেসমিন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জেসমিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
কেন্দুয়া থানা ওসি কাজী শাহ নেওয়াজ জানান, আজ (মঙ্গলবার) সকালে নিহতের বাবা হত্যা মামলা দায়ের করলে আটক জোবাইদকে দুপুরের দিকে আদালতে পাঠানো এবং এর আগে নিহতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।