লোকমান হাফিজ:
ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে থাকে। সারী নদী ও পিয়াইন নদী দিয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় পাহাড়ি ঢলে। এই পাহাড়ি ঢলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
থেমে থেমে টানা বৃষ্টি চলার কারণে নিম্নাঞ্চল ভরে বর্তমানে রাস্তাঘাট মানুষের বসতবাড়িসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বসতবাড়িতে পানি ওঠায় পানিবন্দী হয়ে অনেকেই তাঁদের গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। অন্যদিকে করোনার কারণে সাধারণ শ্রমজীবী পেশার মানুষের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। আবার ঘর পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে অব্যাহত বৃষ্টির ফলে উপজেলা সদর ও সিলেট সদরের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কের ওপর দিয়ে কোথাও কোথাও দুই থেকে তিন ফুট উচ্চতায় পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানিতে তলিয়ে গিয়ে উপজেলা সদর ও সিলেট সদরের সঙ্গে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।
পাহাড়ে বৃষ্টি হলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদি পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়, তাহলে মানুষের জানমাল রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্লাবিত এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বৃষ্টির পানিতে ডুবেছে উপজেলার নিম্নাঞ্চল। সড়কে পানি-কাদায় একাকার। বিঘ্ন ঘটছে যান চলাচলে। ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় গত তিন দিনেও এ অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি।
জানা গেছে, উপজেলার বিছানাকান্দি পর্যটন কেন্দ্র এবং আনফরেরভাঙ্গা নামক স্থানের নদী পাহাড়ি ঢলের পানিতে টুইটুম্বুর। আগত স্থানীয় পুরুষ মহিলাদেরকে ইঞ্জিন নৌকায় নদী পার হতে দেখা যায়। লাফনাউট বাজার পেরিয়ে সাতাইন পর্যন্ত সারি গোয়াইনঘাটের দুই কিলোমিটার রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত। বর্তমানে ওই সড়ক দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে বন্জাফলংয়ের পিয়াইন নদী পাহাড়ি ঢলের পানিতে থৈথৈ করছে, পাহাড় থেকে অবিরাম পানি নামছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আলী জানান, দুপুর ১২টা পর্যন্ত পাহাড়ি ঢলের পানি বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। পিয়াইন নদীতে পাহাড়ি ঢলের পানির জোর বেশি হওয়ায় উপজেলার আলীরগাঁও ইউনিয়নে পানি বাড়ার পরিমাণ বেশি। সারিঘাট ও গোয়াইনঘাটের ইটের ভাটার সামনের কিছু রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে।এছাড়া উপজেলার পূর্ব জাফলং, পশ্চিম জাফলং, ডৌবাড়ী, লেংঙ্গুরা, রুস্তমপুর, তোয়াকুল ও নন্দিরগাঁও ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।