নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই প্রায় ১২৫ ফুট উচ্চতার একটি লম্বা টাউয়ার, টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ভবনে বসানোর অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে, উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ছাদে গিয়ে দেখা যায়, গজিয়ে উঠেছে এক দানবীয় বিশাল টাওয়ার। হঠাৎ সবানো সরকারি ভবনের এ টাওয়ারটি এখন টক অফ দা টাউন। এ ভবনের নীচতলা ও দোতালায় বিভিন্ন ধরনের দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ভবনের গঠিত কমিটি ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে। ৩য় তলায় রয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সম্মেলনের একটি কক্ষ। আর ছাদের একাংশে রয়েছে দুটি গ্লাস করা রুম, যার একটি ১ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া ও ৪০ হাজার টাকা জামানতের বিনিময়ে ১ বছর মেয়াদী ভাড়া দেয়া হয়েছে হোম ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড প্রোভাইডার কোম্পানিকে। আর এই ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড প্রোভাইডার কোম্পানিটি ভবনটির ছাদ খনন করে বসিয়েছে প্রায় ১২৫ ফুট দীর্ঘ বিশাল টাওয়ার। সেই সাথে বসিয়েছে টাওয়ারটি কে ধরে রাখার বিভিন্ন ধরনের তারের টানা ভবনের ছাদের বিভিন্ন অংশে এসব বসাতে গিয়ে, ছাদের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে বসিয়ে আবার পলেস্তারা করেছে এই ভারাটিয়া। যে কাজ গুলোর পুরোটাই হয়েছে নিয়ম বহির্ভূতভাবে।
এ বিষয়ে হোম ইন্টারনেট কোম্পানির পরিচালক মো. নাজমুল হাসান এবং মোস্তাকিম বলেন, চলিত জুন মাস থেকে তাদেরকে ভাড়া দেয়া হয়েছে। আনোয়ার সাহেব এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা সুজায়েত সাহেবের সাথে কথা বলে, ফর্ম নিয়ে টাওয়ার বসানোর মৌখিক শর্তে টপ ফ্লোরের একটি রুম ভাড়া নিয়েছি। ওনারা মিটিং করেই আমাদের রুম ভাড়া দেন। আমাদের দোকান ভাড়া দেয়া এবং টাওয়ার বসানোর বিষয়ে ওনারা মিটিং করে আমাদের কাছে জামানত নিয়ে রুম ভাড়া দিয়েছেন। আমরা ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে অফিস সাজানোর কাজ শুরু করেছি। টাওয়ার থেকে কোন স্বাস্থ্য ঝুঁকি বা ভবনের কোন ঝুঁকি আছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে নাজমুল জোর দিয়ে বলে, ডেফিনেলি না।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মিনজু ও গোলাম সারোয়ারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তারা এক বাক্যে বলেন, বিগত কয়েক মাসে আমাদের কোনো মিটিং হয়নি নতুন ভাড়াটিয়ার বিষয়ে এবং ছাদে টাওয়ার বসানোর বিষয়ে আমরা অবগত নই। নিয়ম-নীতি বহির্ভূতভাবে কে বা কাহারা দোকান বরাদ্দ দিয়েছে এবং ভবন ছিদ্র করে টাওয়ার বসানোর অনুমতি দিয়েছে তা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবি করছি। গোলাম সারোয়ার আরো বলেন, সুজায়েত ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে এ সব একাই করেছে। এর বিষয় আমরা কেউ কিছু জানিনা।
এ বিষয়ে কমিটির অপর সদস্য উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, বিষয়টির ব্যপারে আমার কাছে যতদুর মনেহয় কোন ইনফরমেশন নেই।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ভবন কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সুজায়েত হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সদস্য পদের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি এ সব বিষয়ে কোন কিছু জানিনা। আমাকে কিছুই বিজ্ঞেস করোনা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও সিফাত-ই- জাহান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ভবনে সম্প্রতি কোন দোকান ভাড়া দেয়া হয়নি। টাওয়ার বসানোর বিষয়টি জানতে পেরে, যারা টাওয়ারটি বসিছে তাদের ৩ দিনের মধ্যে টাওয়ার অপসারণ পূর্বক ক্ষতি পূরণ দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।