কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন (স্টাফ রিপোর্টার) : নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় কন্যাদের দেখতে এসে প্রথম স্ত্রী’র কুঁড়ালের আঘাতে শ্বশুরবাড়িতে স্বামী নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের কৈলাটি গ্রামে। শনিবার সকাল ১১টার দিকে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ এবং এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রীর রুবিনাকে (২৮) আটক করা হয়েছে।
নিহতের শ্বশুরবাড়ির লোকজন পুলিশকে জানায় দুই মাস আগে তাদের তালাক হয়েছে। আর নিহতের ছোট ভাই বলছে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেনি। প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও মেয়েদের অনুরোধে তাদের দেখতে ঈদের দিন শ্বশুর বাড়িতে এসেছিলেন।
খবর পেয়ে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ফখরুজ্জামান জুয়েল ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
নিহত মো. রুকু মিয়া (৩৫) নেত্রকোনার পুূর্বধলা উপজেলায় ঘাগড়া ইউনিয়নের লেটিরকান্দা গ্রামে মো. সামছুদ্দিনের ছেলে। রুবিনা নিহতের প্রথম স্ত্রী এবং এ সংসারে তার ১০ ও ছয় বৎসর বয়সি দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। রুকু মিয়া গাজীপুরে একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করতেন। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন।
নিহতের ছোট ভাই আসাদ মিয়া আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, ঈদের আগে প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও মেয়েদের জন্য টাকাও পাঠিয়েছিলেন। লেটিরকান্দায় ঈদ জামাত শেষে স্ত্রী ও মেয়েরা ফোনে তাকে কৈলাটি গ্রামে আসার কথা বলে। তিনি তাদের দেখতে প্রথম স্ত্রী’র শ্বশুরবাড়িতে দুপুরের দিকে রওনা দেন। শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে ভাইয়ের সাথে শেষ কথা হয়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন খাবার শেষ এখন ঘুমায়ে পড়বো। প্রায় তিনঘন্টা পর অর্থাৎ রাত ২টার দিকে ভাইয়ের মৃত্যুর কথা ভাবী’র বাবা ও ভাই ফোনে জানায়।
সকালে বাড়ি (লেটিরকান্দা) থেকে এসে দেখি মাথার পিছনে রক্তাক্ত আঘাত ও কানের পাশ দিয়ে আরেকটি আঘাত। এ প্রতিবেদন (শনিবার সকাল ১১টা) লেখা পর্যন্ত সুরতাহাল রিপোর্ট তৈরি করছে এবং যে কুঁড়াল দিয়ে আঘাত করেছে সেটি জব্দ করেছে পুলিশ। ভাইয়ের প্রথম পক্ষের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তালাকের কথা বলছে। কিন্তু জানা মতে বিবাহ বিচ্ছেদের কোন ঘটনা ঘটেনি ও ভাইয়ের আরেকটি স্ত্রীও রয়েছে।
কলমাকান্দা থানার ওসি এটিএম মাহমুদুল হক স্ত্রী’র কুঁড়ালের আঘাতে স্বামী মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলে এসে নিহতের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি নিহত রুকু মিয়া একাধিক বিয়ে করেছেন। ঈদের দিন সন্ধ্যায় প্রথম স্ত্রী’র বাবার বাড়িতে এসেছেন। দুই মাস আগে তাদের তালাক হয়েছে। এনিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রথম স্ত্রী রুবিনাকে আটক ও কুঁড়ালটি জব্দ করা হয়েছে।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ফখরুজ্জামান জুয়েল জানান, খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী মহোদয়সহ আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে।