আজ বুধবার (২১ এপ্রিল), বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ১৩তম দিন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১২ টায় খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের রুটিন চেকআপের পর ব্রিফিং করেছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
এ সময় তিনি জানান, “করোনা আক্রান্তের ১৩তম দিনে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অনেকটাই ভালো। তার শরীরে জ্বর নেই। রুচি ঠিকঠাক আছে। শ্বাস-প্রশ্বাসের স্যাচুরেশন স্বাভাবিক রয়েছে।
তিনি বলেন, বুধবার (২১ এপ্রিল) খালেদা জিয়ার করোনা আক্রান্তের ১৩তম দিন। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে গত প্রায় ২৪ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে তার শরীরে কোনও জ্বর আসেনি। আমাদের চিকিৎসক টিমের প্রফেসর ডা. সিদ্দিকী সাহেবও বলেছিলেন, চলমান ৪৮ ঘণ্টা খুবই ক্রুসিয়াল। অর্থাৎ বুধবার দুপুর পর্যন্ত আমাদের ক্রুশিয়াল টাইম। এ অবস্থায় আজকে পর্যন্ত তার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক আছে। অক্সিজেন স্যাচুরেশন খুবই ভালো আছে। খাবার রুচি আগের মতই আছে। কাশি, গলাব্যথা কখনোই ছিল না, সেটি এখনও নেই। উনি অন্যদিনের চেয়ে আজকে অনেকটা ভালো বোধ করছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। এ অবস্থায় উনার চিকিৎসা যা চলছে সেটাই চলবে। পরবর্তীতে ১৪তম দিন (বুধবার) পার হওয়ার পর আবার মেডিকেল বোর্ড বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিক চিকিৎসার খোঁজ-খবর রাখছেন। সেই সঙ্গে উনার সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান ম্যাডামের চিকিৎসার সার্বক্ষণিক সমন্বয় করছেন। দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্যরাসহ দলের লাখো নেতাকর্মী ম্যাডামের চিকিৎসার ব্যাপারে উদগ্রিব। আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের কোটি কোটি মানুষ ওনার জন্য দোয়া করছেন। আবারও তিনি আপনাদের অনুরোধ করেছেন তার সুস্থতার জন্য যাতে দেশবাসী দোয়া করেন এবং দেশের সবাই যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত হলে চার সপ্তাহের মধ্যে টিকা দেওয়া যায় না। ডা. জাহিদ বলেন, উনি একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ সেজন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে রাখতে হবে। আর এই মাসটা (এপ্রিল) পুরোটাই সার্বক্ষণিক মনিটরিং করতে হবে। কারণ আপনারা জানেন অনেক করোনা রোগীর কিন্তু দুই সপ্তাহে নেগেটিভ হয় না। চার সপ্তাহ লাগে। ওনার চেয়ে যাদের বয়স কম তাদেরও এ ধরনের ঘটে। সুতরাং চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি রাখা যাবে না। সার্বক্ষণিক নজরে রাখতে হবে।
ব্রিফিংকালে ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকীসহ চিকিৎসক টিমের অন্যরা এবং চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল খালেদা জিয়া করোনা আক্রান্ত হন। গত ১৫ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান করা হয়। সিটি স্ক্যান শেষে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, সিটি স্ক্যান রিপোর্ট অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়ার শরীরে করোনার সংক্রমণ খুবই সামান্য। যে কারণে তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। এরপর থেকে চিকিৎসকরা তার বাসায় গিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন।