বিদেশি সাংবাদিকদের গতিবিধি চিহ্নিত করে তাদের কার্যক্রম রুখতে নজরদারি বাড়িয়েছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি)। এছাড়া তাদের ভয়ভীতি দেখানো এবং মারধরেরও অভিযোগ রয়েছে।
চীনের মানবাধিকার অ্যাক্টিভিস্ট জিয়ানলি ইয়াং এ ব্যাপারে ম্যাগাজিন ‘ন্যাশনাল রিভিউ’-তে একটি প্রতিবেদন লেখেন। সেখানে তিনি বলেছেন, চীনে বিদেশি সাংবাদিকরা প্রতিবেদন তৈরি করতে গেলে তাদের নজরদারিতে রাখার ইতিহাস দীর্ঘ সময়ের। এমনকি গত বছর করোনাভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে যাওয়ার মধ্যেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
জিয়ানলি ইয়াং লিখেছেন, চীনে বিদেশি সাংবাদিকদের রিপোর্টিংয়ের বিষয়টি নজরদারিতে রাখার ব্যাপারে সিসিপির দীর্ঘ সময়ের ইতিহাস রয়েছে। এমনকি ২০২০ সালে করোনাভাইরাস ছড়ানোর বছর এবং করোনা মহামারি আকারে দেখা দেওয়ার বছরেও কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। করোনাভাইরাস বিস্তার পর্যবেক্ষণ ও নজরদারিতে রাখার জন্য রাষ্ট্রীয় নজরদারি ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়। বিদেশি সাংবাদিকদের যারা এ ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকেও ওই নজরদারি ব্যবস্থায় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল।
অভিযোগ উঠেছে, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে নেওয়া প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, ভয়ভীতি ও ভিসাসংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতাকে ব্যবহার করেছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি। এসব কারণে চীনে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় দ্রুত অবনতি’ ঘটছে। এমনটাই মনে করছে চীনে কর্মরত বিদেশি সাংবাদিকদের সংগঠন ফরেন করেসপনডেন্টস ক্লাব অব চায়না (এফসিসিসি)।
এফসিসিসি জানিয়েছে, গত তিন বছরে চীনে বিদেশি সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশের কোনো দিক থেকেই উন্নতি হয়নি।
এফসিসিসি বার্ষিক এক প্রতিবেদনে বলেছে, গত কয়েক বছরে কোনো সাংবাদিক তাদের কর্মপরিবেশের উন্নতি হয়েছে বলে সংগঠনকে জানায়নি। দেড়শ সাংবাদিকের ওপর পরিচালিত জরিপ ও ব্যুরোপ্রধানদের দেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদন।
এফসিসিসির ভাষ্য, বিদেশি সাংবাদিক, তাদের চীনা সহকর্মী, এমনকি বিদেশি সাংবাদিকরা যাদের সাক্ষাৎকার নিতে চেয়েছেন, তাদের হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখাতে রাষ্ট্রের সব শক্তিকে ব্যবহার করা হয়েছে।
ইয়াহু নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের স্পর্শকাতর এলাকায় প্রবেশ করে প্রতিবেদন তৈরি করা থেকে বিদেশি সাংবাদিকদের বিরত রাখতে কর্তৃপক্ষ জনস্বাস্থ্যবিষয়ক উদ্বেগকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করায়। এ ছাড়া বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখার হুমকিও দেওয়া হয়। সংবাদ সংগ্রহে বাধা তৈরির জন্য বিদেশি সাংবাদিকদের ভিসাসংক্রান্ত বিধিনিষেধ দিয়ে চাপের ভেতর রাখা হয়।