নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনায় জেলা প্রশাসক গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ এর ফাইনাল ম্যাচে জাতীয় দলের ফুটবলার আরিফ হোসেন ও তাঁর সহোদর রবিনের ওপর হামলার প্রতিবাদে কেন্দুয়ায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই মানববন্ধন হয়। এতে ক্রীড়াপ্রেমী, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সেকুল ইসলাম খান, কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লাইমুন হাসান ভুইয়া, উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক, সাংগঠনিক সম্পাদক জসিমউদ্দীন খোকন, কেন্দুয়া উপজেলা ফুটবল টিমের কর্মকর্তা তাপস এবং মানবাধিকার কর্মী হলি খান।
বক্তারা বলেন, জেলা পর্যায়ের মর্যাদাপূর্ণ ফাইনাল খেলায় মাঠে ঢুকে খেলোয়াড়দের ওপর হামলা শুধু ক্রীড়াঙ্গন নয়, জননিরাপত্তার ওপরও বড় প্রশ্ন তোলে। জাতীয় দলের খেলোয়াড় আরিফ হোসেনকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়েছে। এ অভিযোগ তুলে তাঁরা দ্রুত বিচার দাবি করেন।
মানববন্ধনে চারটি দাবি উত্থাপন করা হয়- নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন, উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন এবং হামলাকারী, উস্কানিদাতা ও দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
রেফারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা খেলোয়াড় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ অনুযায়ী ম্যাচের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেফারির পক্ষপাতমূলক ও প্ররোচনামূলক আচরণ তদন্তের দাবি জানানো হয়। প্রয়োজনে বিষয়টি বাফুফে ও উচ্চপর্যায়ের কাছে পাঠানোর আহ্বান তোলা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুখময় সরকারের অপসারণ অভিযোগ রয়েছে- এডিসি সুখময় সরকার আহত খেলোয়াড়দের সত্ত্বেও খেলা পুনরায় শুরু করতে চাপ দেন এবং খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। এ কারণে তাঁকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
ফাইনাল ম্যাচ নিরপেক্ষ মাঠে আয়োজন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে পুনর্নির্ধারিত ফাইনাল একটি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজনের দাবি করা হয়।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বের হয়ে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেয়। সেখানে বিক্ষুব্ধ লোকজন টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে নেত্রকোনা–কেন্দুয়া সড়কে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ থাকে।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি বলেন,
“জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী। আমরা দ্রুত পদক্ষেপ পাব বলে আশাবাদী।”
তবে বিক্ষোভকারীরা দাবি বাস্তবায়নে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন তাঁরা।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ শেষে কেন্দুয়ার সর্বস্তরের জনগণের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চার দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মিহির রঞ্জন দেব বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত।

