গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি:
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবদুর রহমানের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসীর (৪৪) খোঁজে তাঁর মেয়ের বাসায় সিলেটেও গিয়েছিলেন লিমন মিয়া (৩৫)। আবদুর রহমানের মেয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থী। নগরের নয়াবাজার খাদরা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। তখন তাসমিন নাহার লুসী মেয়ের বাসায় ছিলেন। সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) একজন ওপুলিশ পরিদর্শক জানান, ৫ নভেম্বর রাতে লিমন বিচারকের মেয়ের বাসায় গিয়ে ঝামেলার চেষ্টা করেন এবং মা-মেয়েকে চরম বিরক্ত করেন।
পরে শাবি শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের সদস্যরা পুলিশে খবর দেন। শাবির প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা লিমনকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দেন। বিচারকের স্ত্রী-মেয়ের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি এবং বিচারককেও জানাতে দেননি মা-মেয়ে। পরে পুলিশ লিমনকে এসএমপি আইনের ৮৯ ধারায় চালান করে। পরদিন লিমনের পরিবারের সদস্যরা সিলেটে গিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে লিমন নিজেকে সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্য বলে পরিচয় দেন।শাবির প্রক্টর মো. মুখলেসুর রহমান বলেন, ৫ নভেম্বর রাতের ঘটনা।
তখনই লিমনকে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়। বাকি কার্যক্রমের বিষয়ে পুলিশ বলতে পারবে। জিডির তদন্ত কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার এসআই প্রণব রায় বলেন, ‘জিডির আগে লিমন তাসমিন নাহার লুসী ও তাঁর মেয়েকে উত্ত্যক্ত করেছিল। ওই দিন আমি ডিউটিতে ছিলাম। পরে আমরা তাকে ধরে কোর্টে চালান করি। পরদিন ম্যাডাম জিডি করেন। লিমন কখন কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে রাজশাহী গেছে, আমরা তা জানি না।’
জানা গেছে, লিমনের বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায়। লিমনের প্রতিবেশী রাজু মিয়া বলেন, সাবেক ইউপি মেম্বার এ এইচ এম সলেমান শহীদের তৃতীয় ছেলে লিমন (৩২)। সলেমান শহীদ ফুলছড়ি উপজেলা বিএনপির সাংগঠিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। লিমন সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি করতেন। ১০ বছর আগে চাকরি চলে যায়। এর পর থেকে তিনি নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কয়েক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন লিমন।
সেই বউও চলে যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবদুর রহমানের বাসায় ঢুকে তাঁর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেন লিমন। বেলা ৩টার দিকে নগরের ডাবতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্পার্ক ভিউ নামের দশতলা ভবনের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন বিচারক। এ সময় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসীও আহত হন। হামলাকারী লিমন মিয়াও আহত হয়েছেন।
তাঁরা দুজনই রাজশাহী হাসপাতালে আছেন। পরবর্তীতে এক ভিডিও সাক্ষাৎকার লিমন দাবি করে তিনি সাবেক সেনা সদস্য ও জিয়া সাইবার ফোর্স গাইবান্ধা জেলার সদস্য। প্রায় ৫ বছর ধরে বিচারকের স্ত্রীর সাথে তার পরিচয় হয় এরপর তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখলেও তাসনিম নাহার হঠাৎ লিমনের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। লিমন ও সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, “লুসির জন্য আমি একবার থানায় আটক ছিলাম তখন আমার বাবার মান সন্মান নষ্ট হয় এবার যেন তা না হয় তাই আমি ওদের সাথে লড়াই করি ” ।
