স্টাফ রিপোর্ট: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে, না হলে দেশে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই, কারণ দলটি নিজেরাই নির্বাচনে যেতে চায় না। বুধবার সকালে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। তৃতীয় মেয়াদে জামায়াতের আমির নির্বাচিত হওয়ার পর দু’দিনের সফরে সিলেটে এসে পৌঁছালে বিমানবন্দরে হাজারো নেতাকর্মী তাকে স্বাগত জানান। পরে ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। তারা নিজেরাই নির্বাচন চায় না। গত তিনটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েও নেয়নি। তারা নির্বাচনে বিশ্বাসী নয়-সেটা প্রমাণ করেছে। জোর করে তাদের ওপর নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া মানে হবে জুলুম।” জামায়াত কোনো রাজনৈতিক জোটে যাচ্ছে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো জোট করছি না।
জনগণকেই সঙ্গে নিয়ে ভোটের ময়দানে নামবো। ইসলামী দলগুলোর পাশাপাশি দেশপ্রেমিক, প্রতিশ্রুতিশীল ও সৎ মানুষরাও আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। আমরা সবাইকে নিয়েই দেশ গড়তে চাই।” দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। মানুষ পরিবর্তন চায়, ভোট দিতে চায়। কিন্তু সুশাসনের পরিবর্তে দেশে দুঃশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, দুর্নীতি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
তাই আমরা জাতিকে আহ্বান জানাচ্ছি-দুর্নীতিকে ‘না’ বলুন। কেউ নিজে দুর্নীতি করবেন না, অন্যকেও করতে দেবেন না।” প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে জামায়াত আমির বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি—অতীতে যারা নির্বাচনে পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে, তাদের সরিয়ে দিতে হবে।
জনগণ যখন জেগে ওঠে, তখন কোনো প্রশাসনিক প্রভাব টিকে না। জনগণের ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটে।” নির্বাচনের সময়সূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আদায় করে ছাড়বো। বেশি দেরি হলে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে। তাই সময়মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াই শ্রেয়।”
তিনি আরও জানান, জামায়াত ইতোমধ্যে বিভিন্ন আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে, তবে তালিকাটি এখনও চূড়ান্ত নয়। প্রয়োজনে এতে পরিবর্তন আসবে বলে জানান তিনি। এ সময় সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির ফখরুল ইসলাম, জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
