ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার বিচারহীনতার ১০০ দিন উপলক্ষে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রতীকী লাশ ও মৌন মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
রবিবার(২৬ অক্টোবর ) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর পাড় থেকে মিছিলটি শুরু হয়। পরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন একাডেমিক ভবন ও সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবন চত্বরে সমাবেশে সমবেত হয়। এসময় তারা আগামী সাতদিনের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। গ্রেফতার করা নাহলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারী দেন তারা।
মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সকল ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্রআন্দোলন, খেলাফত ছাত্রমজলিস, জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার নেতৃবৃন্দসহ শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “সাজিদ হত্যার ১০০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো দোষীদের গ্রেফতার করা হয়নি, আমরা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেছি একটি ছাত্র খুন হওয়ার তিন থেকে সাতদিনের মধ্যে খুনীদের গ্রেফতার করা হয়, ইবি প্রশাসন এতটাই অদক্ষ ও অযোগ্য যে তিনমাস দশদিন পরেও খুনীদের কোনো কিছুই বের করতে পারে নি। আমরা চাই অতিদ্রুত খুনীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দেওয়া হোক।”
ইবি ছাত্রশিবিরের সেক্রটারি ইউসুব আলী বলেন, “সাজিদের হত্যার ১০০ দিন পেরিয়ে গেছে কিন্তু এখন পর্যন্ত খুনিদের গ্রেফতার আমরা দেখতে পাইনি। আমরা সাজিদের বিচার না পাওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছেড়ে যাবো না। এই খুনের বিচার যদি নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে আমাদের ক্যাম্পাসের কোনো শিক্ষার্থী নিরাপত্তাবোধ করবে না। আজকে আমার ভাই-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমরা প্রশাসনের কাছে জানতে চাই এমন কি আছে যে কারণে এখনো খুনিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আমরা প্রশাসনকে বলছি অতিদ্রুত খুনীদের গ্রেফতার করার ব্যবস্থা করুন।”
ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, “শহীদ সাজিদ আব্দুল্লাহ খুন হয়েছে আজকে ১০১ তম দিন চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অথর্বের ভুমিকায় আছে। সিআইডিকে তদন্তভার দিয়েছে, সিআইডি কর্তৃপক্ষ বারবার সময় নিচ্ছে। আমার বিশ্বাস আছে সিআইডির তাদের কর্মকান্ড চালাচ্ছে। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিআইডি ছাত্রনেতৃবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের সাথে বসবে। কিন্তু আজকের এই বসা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিআইডি কর্তৃপক্ষের সাথে শেষ বসা। এরপরে আমরা এক সপ্তাহ সময় দিবো। খুনি যত শক্তিশালী হোক না কেন তাদের গ্রেফতার করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত সাজিদের খুনীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা না করা হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”
উল্লেখ্য, গত ১৭ই জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে আল কুরআন বিভাগের ছাত্র সাজিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ১৮ই জুলাই সকালে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে ৩রা আগস্ট ভিসেরা রিপোর্টে শ্বাসরোধে সাজিদের মৃত্যু হয় বলে জানানো হয়। এই ঘটনার পর থেকে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতসহ সাজিদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
