রুহুল আমিন,ডিমলা(নীলফামারী)
”সমন্বিত উদ্যোগ, প্রতিরোধ করি দুর্যোগ” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নীলফামারীর ডিমলায় সোমবার (১৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
১৯৮৯ সাল থেকে প্রতিবছর ১৩ অক্টোবর সারা বিশ্বে এ দিবস পালিত হয়ে আসছে। দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে জনগণ ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এ দিবসের মূল উদ্দেশ্য। বাংলাদেশের মতো অন্যান্য দেশও এ দিবসকে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগে বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। গত দুই দশকে দেশে ১৮৫টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটেছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উপকূলীয় ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। বিশেষজ্ঞরা বলেন, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি পূর্বাভাস ও প্রস্তুতির কারণে অনেকাংশে কমানো গেলেও বর্তমানে ভূমিকম্প, বজ্রপাত ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ নতুন আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েছে। তাঁরা জোর দেন প্রশিক্ষিত জনবল কাঠামো গঠন এবং স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর।
উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির আয়োজনে সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শেষ হয়। এতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, স্বেচ্ছাসেবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
পরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আশরাফুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বীরেন্দ্রনাথ রায় এবং উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের মাধ্যমে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব। প্রত্যেক নাগরিকের উচিত দুর্যোগ মোকাবিলায় নিজেকে প্রস্তুত রাখা এবং পারিবারিক পর্যায়ে ঝুঁকি হ্রাসে সচেষ্ট থাকা।
আলোচনা সভা শেষে দুর্যোগ মোকাবিলা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক দল মাঠে উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসা কার্যক্রমের প্রদর্শনী করে, যা উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠান শেষে সফল স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরানুজ্জামান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী এবং সুধীজন।