নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার ভাটাপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী সুকেশ করের স্ত্রী পদ্মাবতি দত্ত নিজে গাছ কেটে পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে পদ্মাবতি পাশ্ববর্তী গ্রামের এক যুবকের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত। এ নিয়ে পরিবারের সিনিয়র সদস্যরা বাধা দিলে তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন পদ্মাবতি। এসব নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকে তাদের মধ্যে।
এরমধ্যে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে পদ্মাবতি তার ঝাঁ’য়ের চিচিঙ্গা গাছ কেটে ফলেন। এ নিয়ে ঝাঁ ছায়া রানী প্রতিবাদ করলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় পদ্মাবতি ঝায়ের কোলের শিশুর নাক খামছে রক্তাক্ত করেন। পরে নিজের এসব অপরাধ ঢাকতে থানায় গিয়ে উল্টো ঝা, চাচাতো দেবর, ভাসুর ও চাচা শ্বশুরসহ পরিবারের ছয় জনের বিরুদ্ধে থানায় মারপিটের অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের স্বাক্ষী করা হয় পার্শ্ববর্তী গ্রাম জৈনপুরের পরকীয়া প্রেমিক কৃপেশ বণিক নামে এক যুবককে। অভিযোগের পর গ্রাম ছেড়ে আশ্রয় নেন মোহনগঞ্জ শহরে এক আত্মীয়ের বাসায়। সেখানে অবস্থান করে নিজেকে নিরাপত্তাহীন বলে দাবি করেন।
পদ্মাবতি ভাটাপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী স্বামী সুকেশ করের স্ত্রী। তার স্বামী সুকেশ কর চার বছর ধরে সৌদি থাকেন।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেশীরা জানান, গাছ কাটা নিয়ে দুই ঝায়ের মধ্যে তর্কাতর্কি হলেও কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি। পদ্মাবতি কিছু লোকের উসকানিতে এমন মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এতে স্বাক্ষী করা হয়েছে পাশের গ্রামের এক যুবককে। এতেই বোঝা যায় এটা কতটা সত্যি অভিযোগ।
পদ্মাবতী দত্তের আপন চাচা শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অনিল চন্দ্র কর বলেন, পদ্মাবতি উচ্ছৃঙ্খল রকম আচরণ করে। ভাতিজা সুকেশ প্রবাসে থাকায় তার স্ত্রী পদ্মাবতী পাশের গ্রামের যুবক কৃপেশের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত। তার এসব অসামাজিক কার্যকলাপে বাধা দেওয়ায় সে বাড়ির কাউকেই সহ্য করতে পারে না। পদ্মাবতি নিজে গাছ কেটে উল্টো পরিবারের সবার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছে। অথচ ওইদিন অনেকে বাড়িতেও ছিলো না। তাকে কেউ মারধর করার তো প্রশ্নই আসে না। তার অভিযোগের স্বাক্ষীও পাশের গ্রামের ওই যুবক। আমাদের কি কোন স্বাক্ষী ছিলো না?
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রঞ্জিত কর বলেন, ঘটনার দিন আমি বাড়িতে ছিলাম। ওইদিন কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তবে গাছ কাটা নিয়ে দুই ঝায়ে তর্কবিতর্ক হয়েছে। পদ্মাবতি মিথ্যা অভিযোগ করে আমাদের সবার মান-সম্মান ক্ষুন্ন করেছে। পদ্মাবতি পরকীয়ায় লিপ্ত এসবে বাধা দেওয়ায় সে সবার প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলো।
এ বিষয়ে পদ্মাবতি দত্ত বলেন, চিচিঙ্গা গাছটি আমি নিজেই কেটেছি এটা সত্য। গাছ কাটার পর তারা সবাই আমাকে মারধর করেছে।
পরকীয়ার বিষেয় জানতে চাইলে তিনি (পদ্মাবতি) বলেন, পরকীয়ার বিষয়টি মিথ্যা। ছয় লাখ টাকা খরচ করে স্বামীকে বিদেশ পাঠিয়েছি এসব করার জন্য? আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি, আইনের মাধ্যমে বিচার হবে।
অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো আমিনুল ইসলাম পিপিএম বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে একই পরিবারের লোকজনের মধ্যে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।