প্রশাসনিক দায়িত্ব, উন্নয়ন প্রকল্প তদারকি কিংবা নীতিনির্ধারণী সভা-এসবই একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিত্যকার চিত্র। কিন্তু সিলেটের গোয়াইনঘাটে সেই চেনা রুটিনে যোগ হয়েছে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য-ইউএনও নিজেই পাঠদান করছেন দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। রোববার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম এলাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আকস্মিক পরিদর্শনে যান ইউএনও রতন কুমার অধিকারী।
পরিদর্শনের একপর্যায়ে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠদানে অংশ নেন। পাশাপাশি অন্যান্য শ্রেণিকক্ষ ঘুরে দেখেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গল্প ও প্রশ্নোত্তরে অংশ নেন। শ্রেণিকক্ষে হঠাৎ এক প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে শিক্ষক হিসেবে পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিশুরা। তারা জানায়, ইউএনও স্যার তাদের নানা শিক্ষামূলক প্রশ্ন করেন, গল্প বলেন এবং সহজ উপায়ে পাঠ মুখস্থ রাখার কৌশল শেখান।
শুধু পড়াশোনা নয়-খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, খেলাধুলা ও নিয়মিত ইবাদত নিয়েও পরামর্শ দেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালমা আক্তার বলেন, এটা শুধু পরিদর্শন নয়, আমাদের জন্য এক প্রেরণার দিন। ইউএনও স্যারের পাঠদান শিক্ষার্থীদের যেমন অনুপ্রাণিত করেছে, তেমনি আমাদের শিক্ষকদের জন্যও এটি ছিল এক নতুন অভিজ্ঞতা। রতন কুমার অধিকারী বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে সময় কাটাতে আমার ভালো লাগে।
এটা শুধু পাঠদানের সুযোগ নয়-স্কুলের বাস্তব অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও প্রয়োজনীয়তা বোঝার সুযোগও মেলে। তিনি আরও জানান, জাতি গঠনে শিক্ষার ভূমিকা অনস্বীকার্য। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যদি কোনোভাবে এই খাতে অবদান রাখতে পারি, সেটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। এ সময় তিনি সীমান্ত এলাকার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অবকাঠামোগত সহায়তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।