স্বীকৃতি বিশ্বাসঃ
দেশজুড়ে এখন শারদীয় দুর্গাপূজার আমেজ। আজ মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে দুর্গা পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। আজ (২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রবিবার) মহাষষ্ঠী পূজার সূচনা। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুসারে ষষ্ঠী তিথির সময়কাল: ষষ্ঠী তিথি শুরু: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৩ মিনিট (বা ৬:৪৩ PM) থেকে।
ষষ্ঠী তিথি শেষ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রবিবার সকাল ১০টা ৪৩ মিনিট (বা ১০:৪৩ AM) পর্যন্ত। ষষ্ঠী বিহিত পূজা: এই দিন সকালে তিথি থাকাকালীন ষষ্ঠ্যাদিকল্পারম্ভ ও ষষ্ঠী বিহিত পূজা সম্পন্ন করা হয়। শুভ সময় অনুসারে এটি সকালের দিকে সম্পন্ন করা হয়। বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস: সাধারণত সন্ধ্যাবেলায় দেবী দুর্গার বোধন (দেবীকে জাগ্রত করা), আমন্ত্রণ (মর্ত্যে আসার জন্য আহ্বান) এবং অধিবাস (পূজার আগে দেবীকে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করা) সম্পন্ন হয়। ষষ্ঠী বিহিত পূজার মাহাত্ম্যঃ দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় এই মহাষষ্ঠী তিথিতেই, যা ষষ্ঠী বিহিত পূজা নামে পরিচিত। কল্পারম্ভ ও অকাল বোধন:ষষ্ঠীর দিনে কল্পারম্ভ দ্বারা দুর্গাপূজার ব্রত ও সংকল্প শুরু হয়।
এই দিনেই মূলত বোধন (দেবীকে জাগ্রত করা) অনুষ্ঠিত হয়। প্রচলিত পুরাণ অনুসারে, শ্রী রামচন্দ্র শরৎকালে (যা দেবতদের নিদ্রার সময়, তাই ‘অকাল’) রাবণ বধের জন্য দুর্গাকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেছিলেন। সেই থেকে এই বোধন অকাল বোধন নামে পরিচিত। বোধনের মাধ্যমে প্রতিমার মধ্যে দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
আমন্ত্রণ ও অধিবাস:আমন্ত্রণ-এর মাধ্যমে ভক্তরা দেবীকে মর্ত্যে আসার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আহ্বান জানান।অধিবাস-এর মাধ্যমে দেবীকে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপনা করে পূজার জন্য প্রস্তুত করা হয়। দেবীর আগমন:এই দিনেই দেবী দুর্গা তাঁর সন্তান লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিককে নিয়ে কৈলাস থেকে মর্ত্যে (পৃথিবীতে) আগমন করেন বলে বিশ্বাস করা হয়।
শুভ সূচনার প্রতীক: ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে পাঁচ দিনব্যাপী শারদ উৎসবের মূলপর্বের শুভ সূচনা হয়। এই পূজার মাধ্যমে ভক্তরা দেবীর আশীর্বাদ কামনা করেন, যাতে পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। মোটকথা, মহাষষ্ঠী পূজা হলো দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে স্বাগত জানানোর এবং পাঁচ দিনের উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা করার পবিত্র দিন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, এবার সারা দেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি দুর্গা পূজা হয়েছিল। ঢাকা মহানগরীতে এবার ২৫৮টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০২৫ সালে যশোর জেলায় মোট ৭০৫টি মন্দির ও মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সদর উপজেলা: ১৬২টি,অভয়নগর: ১২৭টি, কেশবপুর: ৯৮টি,মণিরামপুর: ৯৬টি,বাঘারপাড়া: ৯১টি, ঝিকরগাছা: ৫৪টি,চৌগাছা: ৪৮টি ও শার্শা: ২৯টি। উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। পুলিশ, আনসার, র্যাব, বিজিবি ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।