স্টাফ রিপোর্ট:
সিলেট শহরে শনিবার সকাল ৭টায় চোখে পড়লো এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য। সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম নিজেই ঝাড়ু হাতে রাস্তায় নেমে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন। শুধু নির্দেশনায় নয়, নিজ হাতে ময়লা পরিষ্কার করে নগরবাসীকে জানিয়ে দেন- এই শহর আমাদের সবার, পরিচ্ছন্নতা শুরু হোক নিজের কাছ থেকেই।
সার্কিট হাউস থেকে শুরু হয়ে জালালাবাদ পার্ক ও ক্বীন ব্রিজ পর্যন্ত চলে এ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম। এতে সহযোগিতা করে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ। অভিযানে অংশ নেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং সামাজিক সংগঠন ‘ক্লিন বিডি’-এর সদস্যরা। ডিসি সারওয়ার আলম বলেন, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর সিলেট গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। হকারমুক্ত, আবর্জনামুক্ত, পরিচ্ছন্ন সড়ক ও ব্রিজ এই শহরের গর্ব হয়ে উঠতে পারে। শহরের মানুষ যদি ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তন করে নিজ জায়গা পরিষ্কার রাখে, তবে পুরো শহরই পরিচ্ছন্ন থাকবে।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আজ আমরা শুধু রাস্তাঘাট নয়, নিজেদের মনও পরিষ্কার করি। প্রকৃতি রক্ষা, শহর পরিচ্ছন্নতা এবং নাগরিক দায়িত্ব-এই তিনটি একসাথে চললে সিলেট হয়ে উঠবে আরও বাসযোগ্য, আরও সুন্দর। ডিসির এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে শহরবাসী। অনেকেই উৎসাহিত হয়ে হাতে ঝাড়ু তুলে নিয়ে এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন, যা পরিণত হয় এক অনুপ্রেরণামূলক সামাজিক উদ্যোগে।
ব্যাটারিচালিত রিকশা বিরোধে পুলিশকে সমর্থন সিলেটের সুধি-সমাজের স্টাফ রিপোর্ট সিলেটে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অবৈধ যানবাহন চলাচল নিয়ে সুধি-সমাজ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃত্বের সাথে মতবিনিময় করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের নবনিযুক্ত কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী। শনিবার দুপুরে পুলিশ কমিশনার অফিসের হলরুমে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিতদের একযোগে অবস্থান-নগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেওয়া হবে না।
সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, এসব যানবাহনের কারণে নগরীর সঞ্চালন ব্যাহত হচ্ছে এবং নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়ছে। সম্প্রতি নগরীতে যেসব হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে এবং পরে অধিক সংখ্যায় ব্যাটারিচালিত রিকশা নামানো হয়েছে-এসব নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অন্দরভুক্ত বক্তব্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, কিছু গ্যারেজ-মালিক ও ইন্ধনদাতা দরিদ্র চালকদের ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে; এদের খুঁজে বের করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বক্তারা দাবি করেন, ব্যাটারি চার্জ করার স্থানে সুনির্দিষ্ট অভিযান চালিয়ে চার্জিং সুবিধা ধ্বংস করলে রাস্তায় পুনরায় ঐ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সহজ হবে। কয়েকজন উপস্থিতি আরও জানান, সাম্প্রতিক অভিযান শেষে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীর চাপ কমে এসেছে – ছোটোখাটো দুর্ঘটনা ও অব্যবস্থাপনা হ্রাস পেয়েছে। সভায় সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোধীসহ রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনেন এবং পুলিশকে সমর্থন করার জন্য জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি অনুরোধ করেন-সামাজিক আন্দোলন হিসেবে অবৈধ যানবাহন ব্যবহার না করার সচেতনতা গড়ে তুলতে সবাই একযোগে কাজ করবেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ব্যাটারিচালিত রিকশা ও হকার উচ্ছেদ অভিযানে গণ-পদযাত্রা আজ স্টাফ রিপোর্ট সিলেট নগরীতে চলমান ব্যাটারিচালিত রিকশা ও হকার উচ্ছেদ অভিযানে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। শনিবার বিকেলে চৌহাট্টা ও জিন্দাবাজার এলাকায় অভিযান চালানোর সময় তিনি নগরবাসীকে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ বসবাসের জন্য রাস্তায় নামার আহ্বান জানান।
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। হকার ও ব্যাটারিচালিত রিকশা-দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবন্ধক। তাই আজ সকাল সাড়ে ১১টায় নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে কোর্ট পয়েন্ট থেকে গণ-পদযাত্রা শুরু করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাপ্ত হবে।
তিনি আরও জানান, যে কোনো রাজনৈতিক বা প্রভাবশালী শক্তি যদি নগরবাসীর শান্তিপূর্ণ দাবির বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদেরকে শক্তিশালী জবাব দিতে হবে। নগর ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে হকার ও অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণ জরুরি। আমরা রাস্তায় থাকবে, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। এদিকে, হকার উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে নগরীতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে; কেউ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন, আবার অনেকে মানবিক দিক বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।