জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় পূর্ব কলকিহারা গ্রামের দশানী নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তা বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ সরকার মহা প্রকল্প গ্রহণ করে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকার জিওব্যাগ ফেলছে নদীর পাড় রক্ষার জন্য । যার কার্যকারিতা বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকায় বিস্তীর্ণচর অঞ্চল থেকে নদী রক্ষা প্রকল্পের উত্তোলনকৃত বালি দুটি ভেকু (এক্সাভেটর) দিয়ে মাটি তুলে ট্রাকে দিচ্ছে এবং সারি সারি ট্রাক দাঁড় করানো আছে। প্রতিদিন বালু এখান থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে।
এতে এই অঞ্চলের রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর ধুলাবালিতে পরিপূর্ণ এবং রাস্তাঘাটের চিহ্নও ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। পুরো এলাকাটি রয়েছে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। রাস্তায় দেখলাম নিজের ঘরবাড়ি রক্ষার্থে এলাকার লোকজন বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করছে তাদের একজনের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, ঐ এলাকার বাক্কা, মোশারফ ও রহিম বাদশা এই বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। এভাবে চললে খুব দ্রুত নদীর তীরবর্তী বাড়িঘর বিলীন হয়ে যাবে, বালু খেকোরা থেমে নেই স্বনামে বেনামে চলছে বালু উত্তোলন।
এখানে জড়িত রয়েছে দেওয়ানগঞ্জ এবং বকশীগঞ্জ উপজেলার কিছু বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এলাকার কিছু পাতি নেতা এবং দালাল ব্যবসায়ী যাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে নির্বিঘ্নে এই ব্যবসা চলছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এখানে স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু মহলের জমি রয়েছে তারা সেই সুযোগে নদীর বালু বিক্রি করে সাবার করে দিচ্ছে। তাদের ভয়ে চর অঞ্চলের মানুষ জিম্মি হয়ে আছে। তারা নদীতে কখনো ড্রেজার মেশিন বসিয়ে আবার কখনো ভেকু দিয়ে নদীর বালু বিক্রি করছে নির্বিচারে। এতে নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গণ সৃষ্টি হচ্ছে। একইসঙ্গে কৃষি জমি ও বসতভিটাও পড়েছে হুমকির মুখে। পাশাপাশি সারা দিন ট্রাকের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আশপাশের মানুষ।
মাঝেমধ্য প্রশাসনের উদ্যোগে এসব বন্ধ হলেও আবার তারা সক্রিয় হয়ে ওঠেন। বালু উত্তোলনকারীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে জায়গা ক্রয় করে বালু উত্তোলন করছে এবং এ জায়গা তাদের, জমিতে চাষাবাদ হয় না বলে তারা বালু বিক্রয় করে দিয়েছে। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোন মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না।
ধারা-৪ এর (খ) অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্য সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হলে অথবা আবাসিক এলাকা থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ ব্যাপারে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে বকশীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা উল হুসনা বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। তদন্ত করে খুব শীঘ্রই ব্যাবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধিঃ রাহিন হোসেন রায়হান।