নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউনিয়নের গাড়াদিয়া গ্রামে জমির সীমানা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাড়াদিয়া গ্রামের আব্দুল মজিদ (৬৫) গত ২৫ জুন কেন্দুয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে ১৩ জুলাই এটি এজাহারভুক্ত হয়। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ওই দিন সন্ধ্যায় ৭ জন প্রতিবেশী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার বাড়ির পেছনের বাঁশঝাড় ও কাঁঠাল বাগানে প্রবেশ করে প্রায় ১০০টি বাঁশ ও ২৫০টি কাঁঠাল কেটে নিয়ে যায় (আনুমানিক মূল্য ৫০ হাজার টাকা)। এ সময় বাধা দিলে বাদী ও তার স্বজনদের মারধর করে গুরুতর জখম এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
তবে এলাকাবাসীর দাবি, মামলাটি সম্পূর্ণ সাজানো ও ভিত্তিহীন। স্থানীয় মো. ইসলাম উদ্দিন (৫৫), লুৎফুর রহমান (৫৫), আলাউদ্দিন (৫০)সহ অনেকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে জমির সীমানা নিয়ে বিরোধ থাকলেও ২৫ জুন কোনো মারামারি বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। বরং বাদী পক্ষ পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে হয়রানি করার জন্যই এই মামলা করেছে।
বিবাদীপক্ষের মান্নান (৪০) বলেন, “আমরা ওই দিন আমাদের নিজ কাজে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ শুনি থানায় আমাদের নামে গুরুতর অভিযোগে মামলা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও হয়রানিমূলক।”
অন্যদিকে, মামলার বাদী আব্দুল মজিদ জানান, “আমাদের জমির কাগজপত্র সঠিক থাকা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষ জোর করে জমিতে প্রবেশ করে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। আহত রোগী এখনো চিকিৎসাধীন। আমরা ন্যায়বিচারের স্বার্থে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। গ্রামের কিছু লোক গ্রামজুড়ে একটা মব সৃষ্টি করে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে আমাদের মামলাকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।এরা এলাকায় জুয়া ,মাদক সহ সকল প্রকার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত। ”
স্থানীয় ইউপি সদস্য অসীম অভিযোগ করে বলেন, “২৫ জুন কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। আমাকে এই মামলার বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। তদন্ত অফিসার কীভাবে তদন্ত করলেন, সেটাও স্পষ্ট নয়। এটি একটি সাজানো মামলা। তাই মিথ্যা অভিযোগে মামলা করার জন্য বাদীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ২১১ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।”
এ বিষয়ে কেন্দুয়া সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা বলেন, “আমি ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সত্য উদঘাটন করেই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তদন্ত অফিসার বদলি হওয়ায় দ্রুত নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে নিয়োগ দেওয়া হবে।”
এদিকে গ্রামবাসী ও সচেতন মহল দ্রুত তদন্ত শেষ করে প্রকৃত সত্য প্রকাশ এবং মিথ্যা মামলা দায়েরকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, ব্যক্তিগত স্বার্থে আইনের অপব্যবহার বন্ধ করতে প্রশাসনের এখনই কার্যকর ভূমিকা রাখা জরুরি।